বাংলাদেশের রাজনীতিতে সিলেট-১ আসনকে বলা হয় ‘নির্ধারণী আসন’। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে এই আসনে জয়ী ব্যক্তির দল সরকার গঠন করায় অনেকের মধ্যে এ বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এ কারণে প্রধান দুই দলের প্রার্থী মোমেন আর মুক্তাদিরকে নিয়ে রয়েছে সাংবাদিকদের বাড়তি মনোযোগ।
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় পরবে এসে দেখা হতেই দুই প্রার্থী পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলান। হাসিমুখে আলাপ করেন কিছুক্ষণ। তারপর দুজন মিলে বড়দিনের কেক কাটেন। করতালি দিয়ে স্বাগত জানান উপস্থিত সবাই ।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরীও এ সময় ছিলেন চার্চের অনুষ্ঠানে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোমেনের সঙ্গে কানে কানে কথাও বলতে দেখা যায় তাকে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি প্রার্থী মুক্তাদির বলেন, “ক্যামেরার সামনে ছবি তোলাকে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বলতে পারেন। তবে এই সৌহার্দ্য অত্যন্ত মেকি। এতে আন্তরিকতা নেই। গত তিন রাতে পাঁচ থানায় পাঁচটি মামলা হয়েছে। আমার শত শত নেতাকর্মী আসামি।”
ধানের শীষের এই প্রর্থী বলেন, “আলাপচারিতার সময় আমাকে উনি (মোমেন) জিজ্ঞেস করলেন, ক্যাম্পেইন ভাল চলছে কি না। জবাবে আমি বললাম, ‘ক্যাম্পেইন করছি। সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের মামলাগুলোও মোকাবিলাও করছি।’
শত প্রতিকূলতার মধ্যেও ‘জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে’ দাবি করে মুক্তাদির বলেন, “৩০ তারিখের ভোটে আমাদের বিজয় অনিবার্য।”
পরে গির্জা থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোমেন পাল্টা অভিযোগের ডালি তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে।
“তাদের হিংসার বিরুদ্ধে আমরা সহিংসতা দেখাচ্ছি না। আমাদের সমর্থকরাও এই হিংসার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অ্যাকশন নেয়নি। আমরা কেবল পুলিশকে জানিয়েছি। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাজ করবে। আমরা পুলিশকে প্রভাবিত করছি না।”
এ আসনের বর্তমান এমপি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাই মোমেন দাবি করেন, সিলেট শহরের এ আসনে বিএনপির প্রার্থীও নির্বিঘ্নে প্রচার চালাচ্ছেন।
“কোথাও তারা আমাদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন না। কিন্তু তাদের মজ্জাগত অভ্যাস নালিশ করা। তাদের নেত্রীও এটা করেন। গত সিটি নির্বাচনেও এটি করেছিলেন। তবু তখন তারা জয় পান। আমি জানি না এটি তাদের কৌশল কি না। এর মাধ্যমে তারা কিছু জনসমর্থন পান কি না। তবে আমরা এসবে নেই। আমরা সব সময় সাদাকে সাদা ও কালাকে কালা বলি।”