ভোটে সাংবাদিকদেরও মোটরসাইকেল চড়তে মানা

ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচারে বারণসহ ডজনখানেক নির্দেশনা দিয়ে সাংবাদিকদের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করেছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2018, 11:01 AM
Updated : 23 Dec 2018, 11:01 AM

৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সামনে রেখে রোববার এই নীতিমালা জারি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ভোটের দিন সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত ও অনুমোদন সূচক স্টিকারযুক্ত যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে মোটরসাইকেল ব্যবহারের জন্য কোনো স্টিকার ইস্যু করা হবে না।

অর্থাৎ ভোটের তথ্য সংগ্রহে যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল বাদে অন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হবে সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের।

নীতিমালা প্রণয়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা যাতে নির্বিঘ্নে তথ্য সংগ্রহ ও প্রচার করতে পারেন সেজন্য নির্বাচন কমিশন নিম্নোক্ত নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে এসব নীতিমালা মেনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

১২ নির্দেশনা

>> নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রদত্ত বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করতে পারবেন। তবে কোনোক্রমেই গোপন কক্ষের ছবি সংগ্রহ কিংবা ধারণ করতে পারবেন না।

>> একই সাথে একাধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই ভোট কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না।

>> ভোটকক্ষের ভেতর থেকে কোনোভাবেই সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

>> ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে; কোনোভাবেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করা যাবে না।

>> সাংবাদিকরা ভোটগণনা কক্ষে ভোট গোনা দেখতে পারবেন, তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না।

>> ভোটকক্ষ থেকে ফেসবুকসহ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা যাবে না।

>> ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

>> ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা প্রিজাইডিং অফিসারের আইনানুগ নির্দেশ মেনে চলবেন।

>> নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।

>> কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করতে পারবেন না।

>> নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনো ধরনের প্রচারণা বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকবেন।

>> নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্য নির্বাচনী আইন ও বিধি-বিধান মেনে চলবেন।

এসব নির্দেশনা না মানলে বা এগুলোর ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন, বিধি ও কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরে নীতিমালায় বলা হয়েছে, সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ভোটের  দিনসহ বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকরা যাতে সহজে নির্বিঘ্নে নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেন সেজন্য সহযোগিতা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

তবে তা অবশ্যই নির্বাচনের সময়, ভোটগ্রহণ ও ভোট গণনার সময় প্রযোজ্য বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য ভোটকেন্দ্রের সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচন নির্বাচন কমিশন থেকে সাংবাদিকদের বিশেষ কার্ড সরবরাহ করা হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাদের সংশ্লিষ্ট এলাকার কার্ড দেবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট উপজেলার সাংবাদিকদের কার্ড দেবেন।

এছাড়া ঢাকা থেকে যেসব সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহ করতে যাবেন, তাদের কার্ড নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হবে।

মোটরসাইকেলে নিষেধাজ্ঞা ২৮ ডিসেম্বর থেকে

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্রে সারা দেশে ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়েছে।

তবে নির্বাচনের প্রার্থী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্রবাহিনী ও প্রশাসনের এ বিষয়ে ছাড় পাবেন।