দীর্ঘদিনের
‘লড়াইয়ের সঙ্গী’
নিজের একটি রিস্টব্যান্ড নিলামে বিক্রি করে
তিনি রণেশ ঠাকুরের পরিবারকে লক্ষাধিক টাকা পাঠিয়েছেন।
রণেশ ঠাকুর বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের শিষ্য। গত ১৭ মে গভীর রাতে সুনামগঞ্জের
দিরাইয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির
দেওয়া আগুনে তার গানের ঘর পুড়ে যায়, ভষ্মীভূত হয় তার চল্লিশ বছরের সাধনার গানের বইপত্র,
বাদ্যযন্ত্র।
ওই ঘটনায় রণেশ ঠাকুর মামলা করলে গ্রামের একজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে দিরাই থানা পুলিশ।
অমি রহমান পিয়াল ফেইসবুকে এক পোস্টে জানান, তিনি তার দীর্ঘদিনের
রিস্টব্যান্ডটি নিলামে বিক্রি করে করোনাভাইরাসের অভিঘাতে
বিপাকে পড়া দরিদ্রদের সহায়তা
করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সুনামগঞ্জের ঘটনা জানার পর মত বদলে সেই অর্থ রণেশ ঠাকুরের পরিবারকে
দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
পিয়াল বলেন, “২০০৫ সালে এটি হাতে পরেছিলাম যতদিন যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হয় ততদিন না খোলার শপথ নিয়ে।”
নিলামে এটির ভিত্তিমূল্য
তিনি ঠিক করেছিলেন ৫০ হাজার টাকা।
অংশ নেওয়ার শেষ সময় দেওয়া হয় ৩০ মে।
পিয়াল জানান,
রিস্টব্যান্ডটি কেনার আগ্রহ দেখিয়ে অনেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
সর্বশেষ দাম ওঠে এক লাখ টাকা।
“তখন পর্যন্ত আমার ইচ্ছে ছিল করোনাভাইরাসের
কারণে বিপদগ্রস্তদের সহায়তা করতে টাকাটা ব্যয় করার। কমপক্ষে ৫ লক্ষ টাকা দাম উঠবে বলে আশা করেছিলাম। ১৯ মে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি।”
পিয়াল জানান, বাউল রণেশ ঠাকুরের ঘর, গানের খাতা, দুষ্প্রাপ্য পুঁথি ও বাদ্যযন্ত্র পোড়ানোর ঘটনায়
তিনি ঠিক করেন, তখন পর্যন্ত ওঠা দামে ব্যান্ডটি বিক্রি করে দেবেন এবং
সেই টাকা রণেশ ঠাকুরকে পাঠাবেন।
তখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিডে ছিলেন আমেরিকা প্রবাসী ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার। তিনি এতে সম্মতি দেন এবং রণেশ ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২১ মে সকালে ডা. ফেরদৌস রণেশ ঠাকুরের মেয়ে জুঁই ঠাকুরের মোবাইল অ্যাকাউন্টে এক লক্ষ টাকা পাঠান
বলে জানান পিয়াল।
তিনি বলেন,
রণেশ ঠাকুরের জন্য টাকা পাঠানোর পাশাপাশি ‘প্রীতি উপহার হিসেবে’ রিস্টব্যান্ডটি রেখে দিতে অনুরোধ করেছেন
ফেরদৌস খন্দকার।