‘পুরো শহর সয়লাব, সুইমিং পুলে কি লাভ!’

ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় আলোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2017, 04:12 PM
Updated : 21 April 2017, 07:10 PM

সম্প্রতি আউটার স্টেডিয়ামে সুইমিং কমপ্লেক্স নির্মাণ নিয়ে মেয়রের সঙ্গে সাবেক মেয়রের বিরোধের বিষয়টিও ফেইসবুকে নানা মন্তব্যে উঠে এসেছে এই জলাবদ্ধতার সঙ্গে।

অনেকেই রসিকতা করে নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় জমে যাওয়া পানিকে বর্ণনা করেছেন ‘সুইমিং পুল’ হিসেবে। জলাবদ্ধতা নিয়ে ফেসবুকে আসছে ব্যঙ্গচিত্র, কার্টুন।

চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী মোস্তফা ইমরান সোহেল লিখেছেন, “পুরো শহর সয়লাব, সুইমিং পুলে কি লাভ!”

হাশেম মোহাম্মদ নামে একজন লিখেছেন- “একদিনের বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত! সুইমিং পুলের কি দরকার মাননীয় মেয়র? মানুষতো রাস্তায় সাঁতার কাটছে... ”

রসিকতায় যোগ দিয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল্লাহ আনসারীও।

তিনি লিখেছেন “একঘণ্টার বৃষ্টিতে বেশকিছু সুইমিংপুল সৃষ্টি হয়েছে। বিনা খরচে সুইমিং করার জন্য স্বাগত। সবার সাঁতার জানা খুবই জরুরি, সাঁতার না জানলে কিন্তু ডুবে মরার সম্ভাবনা আছে এই শহরে!”

এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন আউটার স্টেডিয়ামের একটি অংশে সুইমিং কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা- সিজেকেএস। সেখানেই প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজন করেন সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

বিভিন্ন বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নাছিরের বিবাদ তুঙ্গে উঠেছিল গত কিছুদিন ধরে। এর মধ্যে মহানগর ছাত্রলীগ সুইমিং কমপ্লেক্স নির্মাণের বিরোধিতায় আন্দোলন শুরু করে।

গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা সুইমিং পুল নির্মাণ বন্ধ করতে প্রকল্প এলাকায় ভাংচুর করার পর পুলিশের সাথে সংঘর্ষ জড়ায়। পরদিন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন সুইমিং কমপ্লেক্স নির্মাণের পক্ষে নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা আবারও তুলে ধরেন।

এর মধ্যে শুক্রবার সকাল থেকে চট্টগ্রামে শুরু হয় ভারি বর্ষণ। টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় নগরীর প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন অলিগলি। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নগরীতে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শহরজুড়ে জলজটের কারণে নগরবাসী একপ্রকার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে তাদের ক্ষোভের প্রকাশ ঘটতে থাকে সকাল থেকেই।

মিজানুর রহমান ইউসুফ ফেইসবুকে লিখেছেন, “চট্টগ্রামের মেয়র একজন খাঁটি রাজনীতিক! পুরা শহরটাকে সুইমিং পুল বানিয়েও তার শখ মেটে নাই!”

হাসান মেজর নামে একজন লিখেছেন- “সুবর্ণ সুযোগ, হেলায় হারাবেন না!!! যারা সাঁতার শেখার জন্য সুইমিং পুল খুঁজছেন, তাদের জন্য পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ সুইমিং পুলে সাঁতার শেখার সুযোগ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম শহর। আজই চলে আসুন!!! আসন আনলিমিটেড!!!”

সংস্কৃতিকর্মী আয়াজ মাবুদ লিখেছেন, “অনেকদিন সাঁতার কাটি না। সে আশা পূরণের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের পথে...।”

আর মোহাম্মদ ওসমান লিখেছেন, “দারুণ অফার! পুরো বন্দরনগরী সুইমিং পুলের আওতায় আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে ফ্রি-তে নগরবাসী সাঁতার শিখতে শুরু করেছে। খেলার মাঠে নতুন করে সুইমিং পুলের প্রয়োজন নেই।”

 

ফেইসবুকে একটি ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করেছেন সাংবাদিক আলোকময় তলাপাত্র।

তিনি লিখেছেন, “বায়োস্কোপ ... ভাসছি আমি, ভাসছ তুমি/ভাসছে মানুষ পানিতে.../ উন্নয়নের জোয়ার দেখে/ষণ্ড নাচে খুশিতে...।”