প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ‘সাম্প্রদায়িক’ প্রশ্ন নিয়ে সরব ফেইসবুক

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় ইংরেজি প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে একটি প্রশ্নের নিন্দা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2016, 10:32 AM
Updated : 22 Nov 2016, 10:35 AM

অল্প বয়সে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় বিভাজনের এমন প্রশ্ন করায় এর প্রতিবাদে সরব ফেইসবুক ব্যবহারকারী অনেকে।

২০১৬ সালে পিইসি পরীক্ষার প্রথম দিনে রোববার ইংরেজি বিষয়ের ওই পরীক্ষা হয়।

প্রশ্নপত্রে সৈকত ইসলাম নামে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রের বাবা-মা, তাদের পেশা ও তাদের অবস্থান নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ দেওয়া হয়।

অনুচ্ছেদ থেকে মোট ৪টি প্রশ্নের উত্তর করতে বলা হয়। প্রথম প্রশ্নের মধ্যে রয়েছে ১০টি প্রশ্ন ছিল, উত্তরপত্রে শুধু শূন্যস্থানের উত্তরটি লিখতে বলা হয়। এখানে প্রতিটি উত্তরের জন্য বরাদ্দ ১ নম্বর করে।

এ ১০ প্রশ্নের তৃতীয়টি ছিল: Saikat is a –

(a) Muslim

(b) Hindu

(c) Christian

(d) Buddhist

পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের একটি ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করে আজম খান নামে একজন লিখেছেন, “৩ নাম্বার প্রশ্নটিতে সৈকত নামের একজনকে উদাহরণ হিসাবে টেনে জিজ্ঞেস করা হয়েছে সে কি হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ নাকি খৃষ্টান। প্রাইমারি স্কুল তথা পিএসসি পরীক্ষায় যখন ধর্ম পরিচয় চিহ্নিত করা জরুরী হয়ে পড়ে তখন বুঝতে হয়, একটা শিশুকে জীবনের শুরুতেই বুঝিয়ে দেয়া হয় ধর্মীয় পরিচয় কতটা জরুরী।”

তিনি আরও লেখেন, “এই বিভাজনটা জানা জরুরি তাও বুঝিয়ে দেয়া হয়। তাদেরকে মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়ে শুরুতেই বিভাজন বুঝিয়ে দিয়ে অমানুষ হবার বীজ বপন করা হচ্ছে। কচি মনে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প। কারা এইসব প্রশ্ন বানায়? কোন সে অমানুষ?”

অয়ন মুকতাদির নামে একজন লেখেন, “বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের প্রতি দশজনের একজন যে জঙ্গিবাদী সেটা এমনি এমনি, এক দিনে হয়নাই। ছোট বেলা থেকে এভাবে বিষ খাওয়াতে খাওয়াতে বিষাক্ত করে দেওয়া হয়েছে এদের মন মানসিকতাকে।”

মইনুল বাপ্পি লিখেছেন, এমন সুক্ষ্ম ভাবে সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত বীজ যারা কচি কোমলমতি শিশু কিশোরদের মনে গেঁথে দেয়ার হীন মানষিকতায় জঘন্য এমন চাতুরতার আশ্রয় নিতে পারে..! সেই প্রশ্ন তৈরিকারী শিক্ষকদের কে জঘন্য রকমের সাম্প্রদায়িক বেজন্মা ছাড়া আর কিছু মনে করার আর কোনো কারনই থাকতে পারেনা..!!  থুঃ....... “

শিবদাস বাস্কে লেখেন, “কচি মনে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প।”

‘এথিস্ট বাংলাদেশ’ গ্রুপে শেয়ার করে অংকুর ভট্টাচার্য লেখেন, “প্রাইমারী থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হল ধর্মপরিচয় কতটা গুরুত্ত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রক্ষণশীলতা মজ্জায় মজ্জায়। একে টেনে বার করা এত সহজ হবে না। বড় অসহায় লাগে এসব দেখলে।”