গংচড়া উপজেলার ইচলির চরের রমজান আলী বলেন, “বাবা আমাদের আবার ঈদ কী?
“ঈদের রাত থেকে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, ঈদ তো দুপুরের কথা, হামার বাড়ি ভাঙ্গোছি, আছতাৎ নিয়ে যাওছি। হামার তো আর জমি নাই, নদী সব খাইছে আর বাকি টুকু আজ গেল।”
ঈদের দিন রান্না করেও খেতে পারেননি জানিয়ে রমজান আলীর বউ আছিয়া খাতুন বললেন, ঘর সরামো, না ভাত খামো বাহে?
চারদিকে থৈ থৈ পানি পেরিয়ে যাচ্ছেন গংগাচড়া উপজেলার চড় ইচলার চড়ের লক্ষিটারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড।
ঐ চরে বসবাসরত রুহুল আমিন জানান, ঈদের রাত থেকে কোনো কিছু খেতে পারেন নাই।
“ঘর নেই, চুলা নেই, খাবো কোথা থেকে, আর যেটুকু আছে তা আজ দিনের মধ্যে অনত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি “
কোথায় যাচ্ছেন জানতে চাইলে হাউ মাউ করে কাঁদতে থাকেন তিনি। পরে বলেন, ইউয়িন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কাছে অনুরোধ করে একটু জায়গা নিয়েছেন সেখানে যাচ্ছেন।
এতদিন জলমগ্ন ঘরে ইট দিয়ে উঁচু করা চৌকিতে পাঁচ সন্তান নিয়ে কোনোভাবে টিকে ছিলেন কৃষক নুর ইসলাম। ঈদের দিনে মানুষের দেওয়া এক পোয়া মাংস রান্নার আশায় মসলা বাটছেন তার স্ত্রী। তবে সেটিও খাওয়া হবে কি না সে জানেন না।
অন্যের জমিতে কাজ করে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোগানো নুর ইসলাম চার মাস ধরে বেকার। ঈদ তার কাছে হতাশায় পরিপূর্ণ।
বানভাসী কৃষক নুর ইসলাম বলেন, “ঈদ তো আমাদের নাই, ঈদ তো আপনাদের।”
চারমাস ধরে বেকার চার সন্তানের বাবা এ মানুষের চোখে আনন্দ বলে কিছু নেই, আছে শুধু জল।