পুলিশ বলছে, আকাশ সাহা নামের ওই কলেজছাত্রের ফেইসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করেই গত শুক্রবার হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা মিলন বলেন, শনিবার রাতে খুলনা থেকে আকাশকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে ‘পরে’ বিস্তারিত জানানো হবে।
আর লোহাগড়ায় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারান চন্দ্র পাল জানান, লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের সালাউদ্দিন কচি নামের এক ব্যক্তি আকাশ সাহাকে আসামি করে গত ১৫ জুলাই রাতে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার’ অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতেই আকাশকে আদালতে হাজির করা হবে।
২০ বছর বয়সী আকাশ লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়া গ্রামের অশোক সাহার ছেলে। শুক্রবার রাতেই অশোক সাহাকে থানায় নেওয়া হয়েছিল, তিনি এখনও বাড়ি ফেরেননি।
স্থানীয়রা জানান, এক ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দীঘলিয়ায় শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আকাশ সাহার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে তাদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে লোকজন।
বিকালে উত্তেজনা আরও বাড়ে এবং সন্ধ্যায় ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে সাহাপাড়ার কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করে কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় মন্দিরে ঢিলও ছোঁড়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা যতক্ষণ সহযোগিতার হাত না বাড়াবেন, ততক্ষণ কেউ কিছু করতে পারবে না। আপনাদের সহযোগিতার হাতটা খুব জরুরি।”
জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও এ সময় মাশরাফির সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে ফেইসবুকে এক পোস্টে মাশরাফি আক্ষেপ করে বলেন, “ছেলেবেলা থেকে যে নড়াইলকে দেখে এসেছি, যে নড়াইলকে নিয়ে আমরা গর্ব করি, সেই নড়াইলের সঙ্গে এই নড়াইলকে আমি মেলাতে পারছি না।”
এই নড়াইলেই গত মাসে ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে এক অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনা পুরা দেশকে স্তম্ভিত করে দেয়।
দেশজুড়ে প্রতিবাদের মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন