গোপালগঞ্জের হাটে টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়

টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় – নাম শুনলেই চমকে উঠবে যে কেউ। এমন নামেই গোপালগঞ্জের কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত করা হয়েছে চারটি গরু। নামের সঙ্গে আকার ও আকৃতিতেও মিল থাকা গরুগুলো ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় থাকবে বলে আশা করছেন তাদের মালিক গিয়াস উদ্দিন।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2022, 08:02 AM
Updated : 8 July 2022, 08:02 AM

২০১৮ সালে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে মাত্র চারটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা গরু দিয়ে অগ্র ডেইরি ফার্মের যাত্রা শুরু করেছিলেন কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের গিয়াস উদ্দিন। এখন তার এ ফার্মে গরুর সংখ্যা ৯০।

বুধবার বিকালে তার খামারে গিয়ে জানা গেছে, এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় নামে চারটি গরু প্রস্তুত করেছেন গিয়াস উদ্দিন। প্রতিটি প্রায় ৩০ মন ওজনের টাইগার ও দুরন্তের দাম হেঁকেছেন আট লাখ টাকা করে আর; প্রতিটি প্রায় ২৮ মন ওজনের রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়ের দাম সাড়ে ছয় লাখ টাকা করে।

গিয়াস উদ্দিন বলেন, “ইতোমধ্যে টাইগার ও দুরন্তের দাম উঠেছে ছয় লাখ টাকা করে। তবে সাত লাখ টাকা করে দাম পেলে বিক্রি করে দিব। আর রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় অন্তত ছয় লাখ টাকা হলে বিক্রি করব।”

আগামী কোরবানিতে তিনি আটটি গরু প্রস্তুত করবেন বলে জানান।

খামারের কর্মচারী সিরাজগঞ্জের শাহাদতপুর উপজেলার আইয়ুব আলী বলেন, “এই চারটি গরুকে কোনো ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ও ইনজেকশন দেওয়া হয়নি। এদের গমের ভুসি, কলাই ভুসি, ধানভাঙা, ছোলাভাঙা ও উন্নত জাতের ঘাসসহ দেশীয় খাবার খাইয়ে বড় করা হয়েছে। প্রতিদিন গরুগুলোকে গোসল ও পরিমাণ মতো খাবার দিতে হয়।”

তিনিসহ ১২ জন শ্রমিক এই খামারের ৯০টি গরুর দেখাশুনা ও যত্ন করেন বলে জানান তিনি।  

গরুগুলো দেখতে আসা স্থানীয় মো. চাঁন মিয়া বলেন, এ খামারে কোরবানি ঈদের জন্য চারটি ষাঁড় প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলো দেখতে বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শক, ক্রেতা ও পাইকাররা আসছেন।

“খামারের মালিক কোনো রাসায়নিক ছাড়াই এ ষাড়গুলো বানিয়েছেন। দেখার মতো ষাঁড় হয়েছে। আশা করি তিনি ভালো দাম পাবেন।”

নড়াইল জেলা সদরের আগদিয়া গ্রামের মো. আতাউর রহমান ও খুলনার পাইকগাছা উপজেলার আমীরপুর গ্রামের বিজয় কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, এই খামারে চারটি বিশালাকৃতির ষাঁড় আছে শুনে দেখতে এসেছি। সত্যিই দেখে অনেক ভাল লাগলো।

এর আগে তারা এত বড় ষাঁড় দেখেননি বলে জানান।

খামার মালিকের চাচা আব্দুর রউফ বলেন, “গিয়াস সাধারণত এই খামারে জন্ম নেওয়া এঁড়ে বাছুর বড় হওয়ার পর (ষাঁড়) বিক্রি করে দেয়। শুধু বকনা বাছুর রাখে ও দুধের জন্য লালনপালন করে। বাছাই করা বাছুরের মধ্যে এবার কোরবানি ঈদের জন্য চারটি ষাঁড় প্রস্তুত করেছে সে। ষাঁড়গুলো ভালোই হয়েছে। ভালো দাম পেলে তার কষ্ট সার্থক হবে।”

খামার মালিক গিয়াস উদ্দিন বলেন, “বেকার যুবকরা যদি এখান থেকে বাছুর নিয়ে কোরবানিকে সামনে রেখে প্রস্তুত করে তাহলে তারা লাভবান হবেন এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।”

এ বছর জেলায় খামার ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৩৩ হাজার পশু কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আজিজ আল মামুন বলেন, জেলায় যে সব খামারিরা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন তাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। আগামীতেও যারা ঈদ উপলক্ষে পশু পালন করবেন তাদেরও সহযোগিতা করা হবে।