আক্কেলপুর থানার ওসি পরোয়ানার ৬ মাসেও গ্রেপ্তার হননি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলায় সিরাজগঞ্জের একটি আদালতের দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছয় মাসেও তামিল হয়নি।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2022, 05:23 PM
Updated : 6 July 2022, 05:28 PM
এ মামলার আসামি ছাইদুর রহমান বর্তমানে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

ছাইদুর রহমান ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলা করেন। এ মামলায় চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তাড়াশ থানার ওসিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আক্কেলপুর থানার ওসি ছাইদুর রহমান তার বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কথা স্বীকার করেছেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে তাড়াশ সদরের দিঘী সগুনা গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে ছাইদুর রহমান একই উপজেলা থেকে বিয়ে করেন।

তাদের ২৫ বছরের সংসারে চার সন্তানের জন্ম হলেও বর্তমানে বেঁচে আছে শুধু এক মেয়ে; যার বয়স ১৭ বছর।

মামলার বাদী (৪১) অভিযোগ করেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তার উপর নির্যাতন শুরু করেন আসামিরা। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে অনেক দেন দরবারও হয়েছে। তবুও বিষয়টির সমাধা না হওয়ায় ২০১৯ সালের ১২ জুন সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ -এ ওসির (স্বামী) বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেন। মামলায় স্বামীর দুই ভাইকেও আসামি কার হয়।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলা করার পর তাদের মধ্যে একটি পারিবারিক আপসরফা হয়। পরে আসামিদের অনুরোধে শান্তিপূর্ণ ঘর সংসার করার শর্তে বাদী মামলাটি প্রত্যাহার করেন।

বাদী অভিযোগ করেন, এই মামলা প্রত্যাহারের পর তার উপর আবার নির্যাতন শুরু হয়। এ অবস্থায় ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি একই আদালতে আবার মামলা করেন তিনি। আদালত চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে এবং তাড়াশ থানার ওসিকে আসামিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।

“কিন্তু আদালতের এ নির্দেশনা ৬ মাসেও বাস্তবায়িত হয়নি।”

এ বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যায় তাড়াশ থানার ওসি শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। পরে কথা বলব।”

এ কথা বলে তিনি টেলিফোনের সংযোগ কেটে দেন।

এরপর একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুর-এ-আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আক্কেলপুর থানার ওসি ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কি না থানার রেজিস্টার না দেখে বলতে পারব না। আমি এখন থানার বাইরে আছি।”    

এ বিষয়ে জানতে বুধবার রাতে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার ওসির সরকারি নম্বরে ফোন করা হলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মালেক ফোন রিসিভ করেন।

তিনি বলেন, “স্যার পারিবারিক ঝামেলায় থাকায় ১০ দিনের ছুটি নিয়ে ৫ জুলাই বাড়িতে চলে গেছেন। বর্তমানে আমিই থানার দায়িত্বে আছি।”

এরপর ব্যক্তিগত নম্বরে যোগাযোগ করা হলে আক্কেলপুর থানার ওসি ছাইদুর রহমান বলেন, “আমার বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা এবং আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথা সবাই জানে। এগুলো পারিবারিক বিষয়। মেয়ে মানুষ; রাগ-গোসসা তো একটু থাকবেই; বোঝেন না? সবই ঠিক হয়ে যাবে।”