লক্ষ্মীপুরে হত্যার দায়ে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

লক্ষ্মীপুরে মো. আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2022, 07:45 AM
Updated : 5 July 2022, 08:41 AM

মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম তিন বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিতরা হলেন- সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বটতলী গ্রামের মিয়াজান বেপারী বাড়ির সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান রুবেল ওরফে হাসিম (৩৪) ও একই এলাকার কাঁঠালী বাড়ির আবদুল্লার ছেলে ফয়েজ আহাম্মদ (২৭)।

আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাগর নামের এক অটোরিকশা চালককে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক। সাগর মান্দারী ইউনিয়নের দক্ষিণ মান্দারী গ্রামের কওলা মুন্সি বাড়ির জামাল উদ্দিনের ছেলে। সাগর জামিনে ছিলেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জসিম উদ্দিন জানান, রায় ঘোষণার সময় মেহেদী ও সাগর আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। মেহেদী ঘটনার পর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে বন্দি ছিলেন। আর ফয়েজ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

মামলার বরাতে তিনি বলেন, গত ২০১৯ সালের ২০ অগাস্ট রাতে মেহেদী তার ব্যবসায়ীক সঙ্গী রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের মো. আলমগীরের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিতে ফয়েজের সহায়তায় তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।

এ ঘটনায় আলমগীরের ভাই হুমায়ুন কবির বাদি হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোপত্র দাখিল করেন।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আলমগীর এবং মেহেদী ইট, বালু, সয়াবিন ও সুপারীসহ বিভিন্ন মালামালের ব্যবসা করতেন। দুইজনের মধ্যে সুপারীর ব্যবসা কেন্দ্রীক টাকা লেনদেন ছিল। তবে মেহেদী জুয়া খেলে ৮ লাখ টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েন। পরে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধারদেনা করে সেগুলো পরিশোধ করতেও হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি।

মেহেদী তার ব্যবসায়ীক সঙ্গী আলমগীরের কাছে ১৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা দেনা ছিলেন। আলমগীর টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিলে মেহেদী তাকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সঙ্গে পরিকল্পনা করে যে, টাকা দেওয়ার পর অন্য আরেকজনকে দিয়ে সেগুলো ছিনতাই করিয়ে আরেক দেনাদারকে দেবে।

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, মেহেদী আলমগীরকে ডেকে নিয়ে টাকা দেয়। পরে অটোরিকশায় করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কের কাজিরদিঘির পাড় এলাকায় নিয়ে আলমগীরকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। এ সময় আলমগীরের কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় হত্যাকারীরা।