বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্ত নেয়।
মো. আশিক উল্লাহ নামের এই শিক্ষার্থী আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র। তাকে ওই ঘটনার পর থেকে প্রক্টরের দপ্তরে রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া ওই শিক্ষিকা ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বুধবার সকালে শ্রেণিকক্ষে আইন বিভাগের অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দীকাকে হেনস্তা করা হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে জানা গেছে।
দুপুরে প্রক্টর আসাবুল হক স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশের বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন।
“আজ আইন বিভাগের শ্রেণিকক্ষে অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দীকাকে হেনস্তা করার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন ও দাবির মুখে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেটের রিপোর্ট সাপেক্ষে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।”
আসমা সিদ্দীকা বলেন,“সকাল ১১টার দিকে চতুর্থ বর্ষের ক্লাস শেষ করে বের হতে গেলে আশিক উল্লাহ আমার পথ অবরোধ করে। পরে বিভাগের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমার কাছে সমাধানও চায়। তখন আমি তাকে বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেই। কিন্তু সে সময় আশিক আমার কোনো কথা না শুনে বরং আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনার পরই আশিক উল্লাহর বহিষ্কারের দাবিতে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিভাগের সামনে অবস্থান নেন। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে বিভাগের শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আন্দোলন চলাকালে বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর একটি অভিযোগও করেন। সেখানে তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আশিক উল্লাহর ছাত্রত্ব বাতিল ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
পরে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসলে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করেন।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এর আগেও এ ছাত্র বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানারকম মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে বিভাগের ইমেজ নষ্ট করেছে। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর স্যারের বাসায় গিয়েও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে।
দীর্ঘদিন যাবত তিনি এ ধরনের বিশৃঙ্খলা করে আসছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিভাগের একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছিলাম। সেই তদন্তের রিপোর্ট এবং আজকের বিষয়টি আমলে নিয়ে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।”
এ বিষয়ে প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, “ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।”