গাড়ি আমদানিতে ‘চট্টগ্রামকে পেছনে ফেলল মোংলা’

সমুদ্র পথে গাড়ি আমদানিতে মোংলা বন্দর শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানিয়েছেন।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2022, 10:21 AM
Updated : 29 June 2022, 10:21 AM

বন্দরটি লাভের মুখ দেখে এবং পদ্মা সেতুর সুফল নিয়ে আরও ভাল অবস্থানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য।

চেয়ারম্যান বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ৮০৮টি গাড়ি আমদানি হয়েছে মোংলা বন্দর দিয়ে। সেখানে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ১৩ হাজার ৯৭৫টি।”

আমদানিকারকদের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় এ বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি দিন দিন বাড়ছে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।

২০০৯ সালের ৩ জুন মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। ধীরে ধীরে লাভে আসে বন্দরটি। এর আগে লোকসানে জর্জরিত ছিল।

চেয়ারম্যান মুসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মোংলা বন্দর একসময় মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে। বন্দরটিকে কিভাবে লাভজনক করা যায় তা নিয়ে সরকার দুশ্চিন্তায় পড়ে। আমদানিকারকদের সঙ্গে বসে এই বন্দরকে গতিশীল করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে বন্দর দিয়ে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি শুরু হয়।

আমদানিকারকদের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। তার মধ্যে ছিল এই বন্দর দিয়ে আমদানি করা গাড়ি দ্রুততম সময়ে খালাস করা, গাড়ি রাখার জন্য আধুনিক শেড ও ইয়ার্ড নির্মাণ, গাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও নিয়মিত মনিটরিং।

চেয়ারম্যান বলেন, এই বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি ও রাখার খরচ চট্টগ্রাম থেকে অনেক কম। চট্টগ্রামের চেয়ে বলতে গেলে খরচ অর্ধেক। এসব সুবিধার কারণে মোংলা বন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীরা বেশি আগ্রহী হন।

“মোংলা বন্দর লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখেছে। এ বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি বছরে ১৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। মোংলা বন্দর থেকে রাজধানীর দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। সেখানে চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার। সেতু দিয়ে মোংলা থেকে রাজধানীতে পৌঁছাতে সময় লাগে চার ঘণ্টার কম।”

মোংলা বন্দরের ব্যবহার আরও বাড়বে বলে মনে করছেন এই বন্দর কর্তা।

তিনি বলেন, মোংলা দিয়ে প্রথম গাড়ি আনে বাংলাদেশের অন্যতম গাড়ি আমদানিকারক মেসার্স হকস্ বে। তারপর অন্য আমদানিকারকরাও এই বন্দর ব্যবহারের এগিয়ে আসেন। ২০০৯-১০ অর্থ বছরে তিন হাজার ১১৯টি, ২০১০-১১ অর্থ বছরে তা তিন গুণ বেড়ে হয় নয় হাজার ৯২৫টি। তারপর থেকে বাড়তেই থাকে।

বাগেরহাট শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন। তিনি মোংলা কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক।

লিটন বলেন, “সময়, খরচ ও নিরাপত্তার কারণে ব্যবসায়ীরা এই বন্দর দিয়ে নিয়মিত গাড়ি আমদানি করছেন। প্রথমবারের মতো গাড়ি আমদানিতে মোংলা বন্দর রেকর্ড গড়ায় কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই ধারা অব্যাহত থাকবে সেই প্রত্যাশা করি।”