জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেছেন, “পর্ন আসক্তি থেকে শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে স্বপন। তার মোবাইলে প্রচুর পর্ন ভিডিও পেয়েছে পুলিশ। স্বপন নিয়মিত পর্ন দেখত বলে স্বীকারও করেছে।”
শনিবার সকালে নেয়াজপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের ওই শিশু স্কুল থেকেই নিখোঁজ হয়। দুপুরে স্কুলের কাছেই তার মরদেহ পায় পুলিশ।
মেয়েটির বাবা দাগনভূঁঞা থানায় মামলা দায়ের করলে ওই রাতেই জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রাম থেকে ৩৫ বছর বয়সী আনোয়ার হোসেন স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই গ্রামের কবির আহমেদের ছেলে।
গ্রেপ্তারের পরদিন রোববার সন্ধ্যায় ফেনীর সিনিয়র বিচারিক হাকিম কামরুল হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন স্বপন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রোববার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা জানান, মেয়েটিকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা ‘স্বীকার করেছে স্বপন।
“শিশুটি শনিবার সকাল ১১টার দিকে স্কুলের ক্লাস থেকে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য বের হলে স্বপন মুখ চেপে ধরে তাকে পুকুরপাড়ে গাছের নিচে নিয়ে ধর্ষণ করে।
“শিশুটি ঘটনা মাকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে তার গলা চেপে ধরে দেয়ালের সঙ্গে কপাল ঠুঁকে রক্তাক্ত করে এবং চোখে আঘাত করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে স্বপন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গাছের মোটা লতাগুল্ম দিয়ে গলায় শক্ত করে পেঁচিয়ে পালিয়ে যায় সে।“
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর স্বপন নিজেই হত্যার বিচার চেয়ে ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন, এমনকি সাংবাদিকদের সাথেও কথা বলেন।
এক পর্যায়ে স্থানীয়দের কাছে পুলিশ জানতে পারে, ওই ঘটনার আগে ও পরে স্বপনকে স্কুল আঙিনায় দেখা গেছে। পরে শনিবার রাতে মামলা দায়েরের পর সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করে পুলিশ।
শিশুটির ময়নাতদন্ত হয় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. ইকবাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়েটির শরীরে যে ধরনের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে, কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে এমন করা কঠিন।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা, সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী-দাগনভূঞা সার্কেল) মোহাম্মদ মাশকুর রহমান, দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাসান ইমাম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক গোলাম জিলানী, জেলা বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইও-২) ও মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মোহাম্মদ শহীদ উল্যাহ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।