বন্যার পানি নামার পর বাড়ি ফিরে কৃষক দেখতে পান গোলায় রাখা সোনা রং ধান কালো হয়ে গেছে, কোনো কোনো ধানে অঙ্কুর গজিয়েছে। এখন সড়কের পর সড়ক ধরে কৃষক-কৃষানীরা ধান শুকানোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, প্রায় ১২ হাজার হেক্টর আউশ ধানের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া যারা কিছুদিন আগে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে একমাত্র বোরো ফসল গোলায় তুলেছিলেন তাদের শুকনো ধানও ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। শুকানো ধান ভেজা থাকলে অঙ্কুর গজিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ থেকে ভালো চাল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার ১১ উপজেলাই প্লাবিত হয়। প্রায় গোটা জেলা পানিবন্দি হয়ে যায়। টানা কয়েকদিন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকতে হয়েছে লাখ লাখ মানুষকে। ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। খাবার, বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয় জেলাজুড়ে।
সদর উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের গোলেরগাঁও গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার বলেন, “আমরার ভয়াবহ অবস্থা। গোলার ধানটান সব পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। চাঁদের আলোর মতো সুন্দর শুকানো ধান বন্যার পানিতে নষ্ট করে গেছে। এখন সারা বছর কী খেয়ে বাঁচব?”
“দুর্যোগ আমাদের পিছু ছাড়ছে না। তিন মাসে তিনটি বন্যা আমাদের কৃষকের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে গেছে।”
হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু বলেন, হাওরের কৃষক চলতি বছর প্রকৃতির সঙ্গে টানা এক মাস লড়াই করে বোরো ধান তুলেছেন। তবে ধান কাটার পর বৃষ্টি থাকায় তা শুকাতে পারেননি। ধানে অঙ্কুর গজিয়ে ছিল। এবারের সর্বনাশা বন্যায় শুকনো ধান নষ্ট হয়ে গেছে।