দক্ষিণাঞ্চল হবে শিল্পসমৃদ্ধ নগরী: আইনুন নিশাত

পদ্মা সেতুর কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চল শিল্পসমৃদ্ধ নগরীতে পরিণত হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত।

রোববার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পদ্মা সেতু এবং এর আর্থ-সামাজিক প্রভাব’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে একথা বলেন পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই এমিরিটাস অধ্যাপক।

কনফারেন্সে প্রধান অতিথি আইনুন নিশাত বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। দক্ষিণাঞ্চল হবে শিল্পসমৃদ্ধ নগরী; যা দেশের অর্থনীতিতে বিস্তর প্রভাব ফেলবে। পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়াবে বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল।

পদ্মা সেতুর নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে শুরু থেকে যুক্ত এই অধ্যাপক বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল পরিবেশের বিষয়ে ও সার্বিক গুণগত মানের ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া যাবে না। পদ্মা সেতুর সাথে জড়িত সবাই চেষ্টা করেছি সেটা রক্ষা করতে।

তিনি বলেন, পদ্মাসেতুর তলা দিয়ে ইলিশ মাছ যাতায়াত করে। তারা আবার দুইশত ডেসিবেলের ওপরে শব্দ হলে সেদিকে আগায় না। অর্থাৎ এই শব্দে ইলিশ মাছ উল্টো দিকে চলে যায়।

“আর তাই পদ্মা সেতু এলাকায় এসে ইলিশ মাছ যাতে রাগ না করে সেজন্য পাইলকে মাফলার দিয়ে মোড়ানো হয়েছিল। যাতে হ্যামার দিয়ে পেটানোর সময় উচ্চ শব্দ  না হয়।”

কনফারেন্সে মূখ্য আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ভারতের জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশীয় গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কে. ভরদ্বাজ।

সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন।

সভাপতি বক্তেব্যে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হবে; যা এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানকে উন্নতির দিকে ধাবিত করবে। আগামীতে দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল হবে অন্যতম বাণিজ্যিক ও শিল্পনগরী।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও পর্যটন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামনিস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা অজয় দাশ গুপ্ত।

কনফারেন্সে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অসীম কুমার নন্দী।

দিনব্যাপী আয়োজিত এ কনফারেন্সে পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দিক নিয়ে ২৩টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।

আন্তর্জাতিক এ কনফারেন্সে দেশ-বিদেশের বরেণ্য অধ্যাপক, গবেষক, সাংবাদিক, কলামনিস্টসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক।