কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ারচরে ২০ থেকে ২২টি বাড়িতে পানি উঠেছে। হলোখানা ইউনিয়নের চর হলোখানা, লক্ষ্মীকান্ত ও সারডোবে পানি ঢুকছে।
তবে কয়েক দিন পানিবৃদ্ধির পর রৌমারীর জিঞ্জিরাম, কালো ও ধরণি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রশীদ বলেন, এ পর্যন্ত দুই হাজার ৬৩ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, তিল ও মরিচ তলিয়ে গেছে। পানি না কমে যদি আরও বাড়ে তাহলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।
ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে প্রণোদনা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে বলে জানান আব্দুর রশীদ।
গাইবান্ধায়ও কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী-তীরবর্তী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ও কামারজানি, ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ও ফজলুপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি উঠেছে।
তবে গাইবান্ধায় আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, চরাঞ্চলের কিছু এলাকায় পানি উঠেছে। নদীতে পানি বাড়লেই এসব এলাকায় পানি ওঠে। বুধবার সকাল ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত যমুনার তিস্তামুখ পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এ সময় ঘাঘট নদীর পানি চার সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি আট সেন্টিমিটার ও করতোয়ার পানি এক সেন্টিমিটার বেড়েছে।
তবে যমুনার সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে প্রতি ঘণ্টায় দেড় সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বন্যার শঙ্কা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিরাজগঞ্জের পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নয় ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এখনও শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে।
“যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
এর বাইরেও টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে চলতি মৌসুমে তৃতীয় দফা বন্যার মুখে পড়েছে সিলেট মহানগরীসহ পাঁচ উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা।
সিলেটে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা যাচ্ছে।
গত এপ্রিলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে অসময়ে বন্যা দেখা দেয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। এই রেশ না কাটতেই আবারও বন্যার কবলে পড়ল সিলেটবাসী।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর বেলা ১২টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছে জানিয়ে আসিফ বলেন, সিলেট নগরীর অন্তত ১০টি এলাকা ছাড়াও জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও সদর উপজেলার অন্তত ৩ শতাধিক গ্রাম এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন