বুধবার অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিতে দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। পরে ফিরে গিয়েছিলেন বাড়িতে।
রাতে যখন জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্রে উত্তেজনার মধ্যে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়, তখন আবার বাইরে আসেন বাহার।
রাত ১০টার দিকে শিল্পকলা একাডেমির বাইরে এসে দাঁড়ান, তখন নৌকার সমর্থকদের বিজয় মিছিল শুরু করে দিয়েছে।
তখন সেখানে এসে বাহারকে দেখতে পেয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকরা।
এই সংসদ সদস্য বলেন, “গত ১৬ বছরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নগর ভবনের এই দুর্নীতির হাত থেকে বাঁচতে মানুষ নৌকার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে নৌকার বিজয়।”
কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়র- ২০০৫ সালে টানা বিজয়ী হয়ে আসছিলেন বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু।
এবার বিএনপি ভোটে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তা উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন সাক্কু। তবে ৩৪৩ ভোটের সামান্য ব্যবধানে হেরেছেন তিনি।
বাহার বলেন, “শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে মানুষ এই ভোট দিয়েছে। এখানে নৌকা কত ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছে, সেটা বড় কথা নয়। বিজয় বিজয়ই।”
আওয়ামী লীগের গৃহবিবাদের প্রেক্ষাপটে এক সময় বিএনপির সাক্কুর উপর আওয়ামী লীগের এমপি বাহারের আশীর্বাদ ছিল বলে কুমিল্লায় কথা রয়েছে। তবে এবার ভোটে বিজয়ী রিফাতও বাহারের অনুসারী।
নবনির্বাচিত মেয়রকে নিয়ে বাহার বলেন, “রিফাত দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। তিনি দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন গড়বেন বলেই আমার বিশ্বাস।”
ভোটের প্রচারে মেয়র সাক্কুর ‘দুর্নীতি’কেই অস্ত্র বানিয়েছিলেন রিফাত। কিন্তু সাক্কু বলে আসছিলেন, তিনি দুর্নীতি করলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিশ্চয়ই রেহাই পেতেন না।
রিফাতকে ছাপিয়ে এই নির্বাচনে দৃশ্যত সাক্কুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিলেন এমপি বাহার। তার বিরুদ্ধে ইসির কাছে একের পর এক অভিযোগ করছিলেন তিনি।
এর ধারাবাহিকতায় বাহারকে প্রথমে সতর্ক করে ইসি। পরে কুমিল্লা ছাড়ার নির্দেশনাও দেয়।
কিন্তু ইসির নির্দেশ উপেক্ষা করে এলাকায়ই থেকে যান তিনি, যা নিয়ে নির্বাচন কমিশনাররা হতাশা প্রকাশ করেছিলেন।
বাহার বুধবার ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তাকে এলাকা ছাড়তে ইসির চিঠি দেওয়ার এখতিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্যকে ইসি এমন নির্দেশ দিতে পারে না। স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনে তিনি সংসদে প্রস্তাব তুলবেন।
আর ভোট শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বাহারের বিষয়টি এখন অতীত হিসেবেই দেখছেন তিনি।