কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে সাক্কুর ঘাড়ে জলাবদ্ধতার খাঁড়া তুললেন অন্য প্রার্থীরা

টানা বৃষ্টিতে কুমিল্লা শহর জলাবদ্ধ হওয়ায় পুরনো ক্ষত নতুন ব্যথা জাগিয়েছে ভোটারদের মনে। তাকেই ‘ইস্যু’ বানিয়েছেন দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর প্রতিদ্বন্দ্বীরা।

কুমিল্লা প্রতিনিধিআবদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2022, 12:15 PM
Updated : 10 June 2022, 12:24 PM

আর সাক্কু তার অর্জন ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলছেন, দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনের পথে রয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতে শহরের রেসকোর্স, ঠাকুরপাড়া, নজরুল এভিনিউ, শিক্ষা বোর্ডের পেছনের এলাকা, জিলা স্কুল রোড, সালাউদ্দিন, কাশারিপট্টি, দ্বিতীয় মুরাদপুর, শাসনগাছা, চর্থাসহ বিভিন্ন এলাকা জলাবদ্ধ হয়।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, "সাক্কু কুমিল্লার মানুষকে পানির নিচে রেখে বরাদ্দের টাকা লোপাট করেছেন।“

আগে থেকেই সাক্কুকে 'ব্যর্থ' ও 'দুর্নীতিবাজ'  আখ্যায়িত করে আসছেন রিফাত।

এর আগে বৃহস্পতিবার দিনভর ২৬ ও  ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠক করেন রিফাত। সেখানে তিনি ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচিত হলে আগামী এক বছরের মধ্যে তিনি জলাবন্ধতা দূর করবেন এবং যানজট সমস্যার সমাধান আনবেন।

এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মেয়র পদের লড়াইয়ে নেমেছেন দুইবারের মেয়র সাক্কু ও আরেক বিএনপিপন্থী নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার।

কায়সার বলেন, “জলাবদ্ধতা কাটাতে তার সুষ্ঠু পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ নির্বাচনের সময় সাক্কুর নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধান জায়গা নিয়েছিল জলাবদ্ধতা নিরসন ও যানজটমুক্ত শহর। কিন্তু সাক্কু কিছু করতে পারেননি। আগের দুই মেয়াদেই সাক্কু ব্যর্থ  হয়েছেন।”

কায়সার বৃহস্পতিবার শহরের তেলিকোনা চৌমুহনী, ডুমুরিয়া, শাসনগাছা, আলেখারচর ও  ইয়াসিন মার্কেট এলাকায় গণসংযোগ করেন; করেন উঠান বৈঠকও। 

অন্য প্রার্থীরাও জলাবদ্ধতাকে ইস্যু বানিয়ে সাক্কুর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তবে সাক্কু নিজেকে 'ব্যর্থ' মানতে নারাজ। দুর্নীতির অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন।

সাক্কুর দাবি, তিনি জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে অনেক কাজ করেছেন। এবার নির্বাচিত হলে জলাবদ্ধতামুক্ত শহর গড়বেন।

“জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে আমার চেষ্টা ছিল সাধ্যমতো। আমার গত মেয়াদের শেষ সময়ে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লা সিটির উন্নয়নে অনেক টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার এই কাজগুলো আগামী দুই থেকে তিন বছরে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হবে। এজন্য চাই কাজগুলোও নিজের হাতে করতে। এ কাজগুলো বাস্তবায়িত হলে কুমিল্লার চেহারা বদলে যাবে। জলাবদ্ধতা ও যানজট থেকে মুক্তি পাবে কুমিল্লা শহরের মানুষ।" 

জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হিসেবে কুমিল্লা-নোয়াখালী চার লেন মহাসড়কের সম্প্রসারণ কাজের জন্য কান্দিখাল ভরাট করাকে দায়ী করেন সাক্কু।

শহরে পানি নিষ্কাশনের মূল পথ সদর দক্ষিণের কান্দিখাল ও ডাকাতিয়া নদীর শাখার ওপর বাসস্থান গড়ে ওঠা ছাড়াও খাল ভরাটা করে গড়ে উঠেছে অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানও। বেদখল ও ভরাট হওয়া যাওয়া খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন শহরবাসী।

আগামী ১৩ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। ১৫ জুন সকাল ৮টা থেকে ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেবেন শহরবাসী।