কুমিল্লা সিটি: প্রচারে বাড়ছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, মেয়র পদপ্রার্থীদের একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ততই বাড়ছে।

কুমিল্লা প্রতিনিধিআবদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2022, 04:43 AM
Updated : 8 June 2022, 04:43 AM

প্রতিদিন সকাল থেকে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। অংশ নিচ্ছেন উঠান বৈঠক ও পথসভায়। প্রার্থীদের পাশাপাশি কর্মী-সমর্থকদেরও ব্যস্ততা বেড়েছে।  

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত মঙ্গলবার দিনব্যাপী নগরীর ১, ৫, ৮, ৯, ১৩, ১১, ১৪ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠক করেছেন।

এ সময় রিফাত বলেন, “সাবেক মেয়র সাক্কুর মনে হয় মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এজন্য তিনি উল্টা-পাল্টা অভিযোগ করছেন নির্বাচন কমিশনে। আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”

“গত ১৬ বছরে নগরবাসী তাদের প্রত্যাশিত সেবা পায়নি। বিশেষ করে যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনে মেয়র পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। যা বরাদ্দ এসেছে তার বেশিরভাগই লুটপাট হয়েছে।”

সাক্কুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নৌকার প্রার্থী বলেন, তিনি দুর্নীতির টাকায় স্ত্রীর নামে কানাডায় বাড়ি করেছেন। এবার উন্নয়নের স্বার্থে কুমিল্লার মানুষ নৌকাকে বেছে নেবে।

অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু মঙ্গলবার দিনব্যাপী নগরীর আদালত এলাকা, চকবাজার, ঋষিপট্টি, উজির দিঘির পাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। এসব এলাকায় কয়েকটি উঠান বৈঠকেও অংশ নেন তিনি।

এ সময় সাক্কু বলেন, এমপি বাহার একজন আইনপ্রণেতা। অথচ তিনি প্রতিদিনই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে চলেছেন। আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি নির্বাচন কমিশনে। তবে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

“নৌকার প্রার্থী বলেছেন, আমি নাকি কানাডায় বাড়ি করেছি। যদিও আমি কখনও সেখানে যাইনি। আর আপনার বৈধ টাকা থাকলে আপনি চান্দের (চাঁদের) দেশে বাড়ি বানাতে পারেন, এতে কার কী আসে যায়। আমি কানাডায় বেগমপাড়ায় বাড়ি বানাইনি। আমার ইচ্ছাও নাই দেশের বাইরে থাকার।”

নগরীর কান্দিরপাড়ে রূপায়ন টাওয়ারের নকশা অনুমোদনে ৮০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন- বিরোধী পক্ষের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সাক্কু বলেন, “তারা (এমপি বাহাউদ্দিন বাহার ও রিফাত) ভোটের সময় এসব কথা বলে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আর মেয়র কোনো প্ল্যান পাশ করতে পারেন না। এটার কমিটি আছে, তারা সবকিছু চূড়ান্ত করলে আমি স্বাক্ষর করেছি। আর অভিযোগ করলে রূপায়ন করবে, তারা অভিযোগ করার কে?”

“তাদের কাছে যদি কোনো প্রমাণ থাকে, তাহলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিক।”

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার মঙ্গলবার দিনব্যাপী নগরীর শ্রীবল্লভপুর, বড় দুর্গাপুর, শ্রীমন্তপুর, উত্তর রামপুর, উত্তর হিরাপুর, দক্ষিণ গোপীনাথপুর, মোস্তফাপুর, কচুয়া, দৈয়ারা ও লক্ষ্মীপুর এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও পথসভা করেছেন।

এ সময় ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী বলেন, “এমপি বাহারের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের যেই অভিযোগ উঠেছে, সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের। না হলে মাঠে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে না।”

“এ ছাড়া ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মতো ভোটারদের আস্থা হারাবে নির্বাচন কমিশন। ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা দেখতে চায়। কুমিল্লার মানুষ দুর্নীতিবাজ ও মাদক কারবারিদের বয়কট করেছে।”

নির্বাচনে মেয়র পদে আরও দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- কুমিল্লা নাগরিক ফোরামের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল (হরিণ প্রতীক) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাশেদুল ইসলাম (হাতপাখা)। তারা নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নগরীতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: