সিটি করপোরেশন হওয়ার পর ১১ বছরে সাধারণ ওয়ার্ডে কোনো নারী কাউন্সিলর পায়নি কুমিল্লা। এবার সেই কাচের দেয়াল ভাঙতে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন তিন নারী প্রার্থী।
Published : 07 Jun 2022, 04:04 PM
প্রচার আর গণসংযোগে তারা এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ভোট শেষেও ভোটারদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
তিন নারী প্রার্থী হলেন- রোকসানা আক্তার, যিনি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী; নাহিদা আক্তার লড়ছেন ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আর নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়ছেন শাহনাজ আক্তার রুনা।
জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী রোকসানা আক্তার মঙ্গলবার সকালে বলেন, তার নির্বাচনী ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে চার প্রার্থীর মধ্যে তিনিই একমাত্র নারী। পুরুষদের সঙ্গে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে।
ওয়ার্ডের উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই প্রার্থী বলেন, “ভোটারদের কাছ থেকে ইতিবাচক ও ভালো সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, ১৫ তারিখের নির্বাচনে জনগণ আমাকে বিজয়ী করবেন।”
কাউন্সিলর প্রার্থী রুনা গত বছর সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হওয়া সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেলের স্ত্রী। একই ওয়ার্ডে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন আপন দেবর সৈয়দ মো. রুমন।
নগরির ৪ নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী রোকসানা আক্তার
"ওয়ার্ডের জনগণের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি সোহেলের মতোই তাদের পাশে থাকব। নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে তাদের সেবা করব।"
এরই মধ্যে ভোটাররা তাকে ‘আপন’ করে নিয়েছে বলে দাবি এই প্রার্থীর।
আর নাদিয়া আক্তার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী। বিল্লাল হোসেনও একই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী। প্রথমে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান।
২ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে নাদিয়ার বিশেষ কোনো প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়েনি।
নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী শাহনাজ আক্তার রুনা
এরই মধ্যে নগরীর ৫ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ আসনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের দুই নেতা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. বিল্লাল হোসেন ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালাম আজাদ হাসেম।
এদিকে অনেক সাবেক কাউন্সিলর এবারও জনপ্রতিনিধি হতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
নগরীর ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী চিকিৎসক ফারজানা আক্তার চৌধুরী বলেন, "ভোটে দাঁড়ানোর আগেও মানুষকে সেবা দিয়েছি বিনা পয়সায়। ভোটে দাঁড়ানোর পর মানুষকে বলছি, আপনাদের জন্য আমার সেবার দরজা সব সময় খোলা থাকবে। আপনাদের আমার কাছে আসতে হবে না, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা পৌঁছে দেব।"
এই প্রার্থীর ভাষ্য, এরই মধ্যে ভোটাররা তাকে আপন করে নিয়েছেন; তাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১০৮ জনের মধ্যে এবারে আলোচনায় তিন নারী প্রার্থী
কাকলি গত নির্বাচনে সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ভোট করে হেরে গিয়েছিলেন।
এবারের ভোট পরিস্থিতি বিবেচনায় জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে এই প্রার্থী বলেন, "ভোটারদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তাদের প্রাপ্য নাগরিক সুবিধা আমি পৌঁছে দিব, ভোটাররাও আমাকে আপন করে নিয়েছে। চারদিকে ভোটারদের প্রচুর সাড়া পাচ্ছি।"
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে প্রার্থীরা টানা ১৩ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের শর্ত মেনে প্রচার চালাতে পারবেন। ১৪ জুন অর্থাৎ নির্বাচনের আগের দিন প্রচার চালানো যাবে না। ১৫ জুন সকাল থেকে ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেবেন নগরবাসী।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন দুইজন। এবার নতুন ভোটার রয়েছেন ২২ হাজারের অধিক।
আরও পড়ুন: