বৃহস্পতিবার নরসিংদী রেল স্টেশনে তারা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এদিকে, তরুণীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলা আক্তারের মুক্তির দাবিতে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে আরেকটি পক্ষ।
রেল স্টেশনে মানববন্ধনে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম, আমরা পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট, নারী নিরাপত্তা জোট, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ নেটওয়ার্ক (এমডিএস), মুক্তি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা, একশন এইড বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়।
এছাড়া মানববন্ধনে আরও কয়েকটি সামাজিক সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একজন নারী স্বাধীনভাবে চলাফেরা করবে – এটা যেমন তার অধিকার, তেমনি সে কেমন পোশাক পরবে সেটাও তার ব্যক্তিগত অধিকার। এতে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এটা সংবিধান পরিপন্থি। স্টেশনে ওই তরুণীকে নির্যাতন করে পুরো নারী জাতীকে অপমান করা হয়েছে।
প্রতিটি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
তারা নরসিংদী রেল স্টেশনে তরুণীকে যারা শ্লীলতাহানি করেছে তাদের সবাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
মানবন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আমরা পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের নির্বাহী পরিচালক জিনাত আরা হক, রিইব-এর পরিচালক রুহি নাজ, জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরামের চেয়ারম্যান মমতাজ আরা বেগম, এস ডি এস-এর পরিচালক নির্বাহী পরিচালক রাবেয়া বেগম এবং নেটজ বাংলাদেশ প্রোগ্রামের ম্যানেজার আফসানা বিনতে আমিন।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক আবু নঈম মারুফ খান ও পুলিশ সুপার মো. আশ্রাফুল আজিমের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।
নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে ‘আমরা নরসিংদীর সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে কয়েকটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা এতে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গ্রেপ্তার শিলা আক্তারের আইনজীবী শারমীন সুলতানা।
তিনি বক্তব্যে অবিলম্বে গ্রেপ্তার মার্জিয়ার মুক্তির দাবি জানান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মার্জিয়াকে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন।
১৮ মে সকালে নরসিংদী রেলস্টেশনে ‘অশালীন পোশাক পরার অপবাদ’ দিয়ে এক তরুণীকে লাঞ্ছিত করা হয়, পরদিন যার ভিডিও ছড়ায় নেট দুনিয়ায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী ও কয়েকজন যুবক ওই তরুণীকে টানা-হেঁচড়া করছে। মেয়েটিকে এক তরুণ আগলে রাখার চেষ্টা করছেন। এক পর্যায়ে কয়েকজন লোকের সহায়তায় মেয়েটি দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে ঢুকে যান।
এরপর কলাপ্সিবল গেট টেনে দেয় এক লোক। কিছুক্ষণ পর লোকজন চলে গেলে এবং পরিস্থিতি শান্ত হলে স্টেশন মাস্টার ওই তরুণীকে তার কক্ষ থেকে বের করেন।
আদালতের নির্দেশে এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রেলওয়ের ভৈরব থানায় মামলা করে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় শিলা আক্তার ওরফে সায়মা, এক যুবক ছাড়াও সঙ্গে থাকা অজ্ঞাত অনেককে আসামি করা হয়।
ওই মামলায় পুলিশ শিলা আক্তার ওরফে সায়মা ওরফে মার্জিয়া ও ইসমাইল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। পরে তাদের পুলিশ রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: