মাঠে খেলা হয় না, দখল করেছে ইট-বালুর ব্যবসায়ী

এলাকার একমাত্র খেলার মাঠ স্থানীয় ব্যবসায়ীর ইট-বালু রাখার কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় খেলাধুলা আর হয় না।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2022, 07:39 AM
Updated : 29 May 2022, 07:39 AM

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাথানডাঙ্গা বাজার সংলগ্ন এই মাঠে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। বাকি পাঁচ দিন শিশু, কিশোর ও তরুণরা খেলাধুলা করত।

এখন এই মাঠের চেহারা বদলে গেছে। মাঠে ফুটবল গড়ায় না; ব্যাট-বল হাতে ক্রিকেটাররাও নামে না। এখানে সেখানে জমা হয়ে আছে ইট, বালু ও খোয়া। এ যেন ইট-বালু রাখার উন্মুক্ত গুদাম।

সাধারণের ব্যবহারের এই মাঠ এভাবে ব্যক্তির দখলে যাওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। তারা মাঠ থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারি ওই খেলার মাঠের পূর্বপাশে এলোয়ার শেখ নামে এক ব্যক্তি ইট-বালু ও খোয়া মজুদ করে ব্যবসা করছেন। এখানে ইট, বালু ও খোয়া রাখায় মাঠের ঘাস মরে যাচ্ছে। এছাড়া স্তূপ করা বালু বাতাসে উড়াছে। এতে খেলাধুলা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তিরও অন্ত নেই।

বাথানডাঙ্গা গ্রামের নওশের মোল্লা, কাবুল শেখ জানান, বাথানডাঙ্গা বাজার সংলগ্ন সরকারি খেলার মাঠে সপ্তাহের প্রতি শুক্র ও সোমবারে হাট বসে। বাকি দিনগুলোয় মাঠটিতে স্থানীয় শিশু, কিশোর ও যুবকরা খেলাধুলা করে। মাঠটি বহুকাল আগে থেকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমান মাঠটি দখল করে  ইট-বালুর ব্যবসা করা হচ্ছে। এতে এখন আর খেলাধুলা করা যায় না।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক যুবক বলেন, তারা ছোটবেলা থেকে এই মাঠে ফুটবল, ক্রিকেট ও ব্যাটমিন্টন খেলে আসছিলেন। মাঠ দখল করে ইট-বালু ও খোয়া রেখে ব্যবসা করা হচ্ছে। এ কারণে এখন আর এই মাঠে খেলাধুলা করা যায় না। খেলতে গেলে খোয়া ও ইটের আঘাতে আহত হতে হয়।

ওই গ্রামের কাশেম মোল্লা বলেন, মোবাইল ও মাদকাসক্তির এই সময়ে মাঠটি দখল হয়ে গেছে। মাঠে খেলাধুলা ও হাট বসার পরিবেশ নেই। এতে যুব সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

“যে মাঠ দখল করে মাঠের পরিবেশ নষ্ট করছে, এলাকার ছেলেদের খেলাধুলায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে তাকে মাঠ থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। এটি আমাদের প্রাণের দাবি।”

এ বিষয়ে এলোয়ার শেখ বলেন, “আমি নতুন ইট-বালুর ব্যবসায় করছি না। দীর্ঘদিন ধরে এই মাঠেই ইট-বালু রেখে ব্যবসা করছি। এতে কেউ কোনো বাধা দেয়নি। এখন আর মাঠে আগের মতো খেলা হয় না। তাই আমি ব্যবসায়ের কাজে ব্যবহার করছি। সরকারের যখন মাঠ লাগবে, তখন আমি মাঠ থেকে ইট, বালু, খোয়া সরিয়ে নেব। মাঠ ছেড়ে দেব।”

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, “মাঠ দখলমুক্ত করতে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। তারপরও জনস্বার্থে আমরা বিষয়টি খোঁজ নেব। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”