ইভিএম দেখতে যাচ্ছেন সাক্কু-কায়সারের প্রতিনিধি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পর্যবেক্ষণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2022, 08:28 AM
Updated : 28 May 2022, 08:28 AM

সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইভিএম কাস্টমাইজেশন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ৩৪ জনের নাম পাওয়া গেছে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানান।

এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে দুজন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্যসাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে দুজন এবং নিজাম উদ্দিন কায়সারের পক্ষে একজন প্রতিনিধির নাম জমা হয়েছে।

বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে ইভিএম কাস্টমাইজেশন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে নির্বাচনের প্রার্থী অথবা তাদের মনোনীত কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানান রির্টানিং কর্মকর্তা।

বিজ্ঞপ্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, “ইভিএম কাস্টমাইজেশন কার্যক্রম যারা পর্যবেক্ষণ করতে চান, তারা ২৬ মে বিকাল ৪টার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে বা প্রতিনিধির নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে। ২৬ মের মধ্যে আবেদন না করলে ধরে নেওয়া হবে যে ওই প্রার্থী ইভিএম কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে আগ্রহী নন।”

শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, “ওই বিজ্ঞপ্তি জারির পর ৩৪ জনের নাম এসেছে। এর মধ্যে তিনজন মেয়র প্রার্থী পাঁচজন প্রতিনিধির নাম দিয়েছেন। বাকিরা কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতিনিধি।“

“এদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে আগামী ৩০ মে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইভিএম কাস্টমাইজেশন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া হবে।”

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, “আমাদের ইভিএমের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। এরপরও নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে সবকিছু ভালোভাবে দেখতে আমাদের দুজন প্রতিনিধি সেখানে যাবেন। তারা প্রযুক্তিতে দক্ষ।”

ফাইল ছবি

স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, “আমি এখনও ইভিএমের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছি না। কারণ, পুরো বিশ্বেই ইভিএম নিয়ে বিতর্ক আছে। তারপরও আমার দুজন লোক সেখানে যাবে। তারা প্রযুক্তিতে দক্ষ, তবে ইভিএম বিশেষজ্ঞ না।“

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, “আমি এখনও দাবি জানাই, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে স্বচ্ছ ব্যালট বক্সে ভোট গ্রহণের জন্য। কারণ, ইভিএম একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনী ব্যবস্থা।”

“এটার প্রতি আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের মানুষের কোনো আস্থা নেই। আর রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছেন, এজন্য আমার একজন প্রতিনিধি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে যাবেন। তবে আমি এটার প্রতি আস্থা রাখতে পারছি না।”

এর আগে মঙ্গলবার নিজাম উদ্দিন কায়সার ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটে ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। এতে তিনি নগরীতে কর্মরত পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলির দাবিও জানান।

মোট সাত দফা দাবি জানিয়ে চিঠিতে কায়সার উল্লেখ করেন, “ইভিএমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের আপত্তি রয়েছে। সাধারণ ভোটাররাও এ বিষয়ে আপত্তি তোলার পাশাপাশি ভোটের ফলাফল পাল্টিয়ে দেওয়া হবে বলে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে।”

“নির্বাচন কমিশন আমাদের প্রার্থীদের নিয়ে এই ব্যাপারে কোনো আলোচনা বা ব্রিফিং কিংবা বিস্তারিত কোনো কিছুই তুলে ধরেনি। তাই আমরাও এ বিষয়ে কিছু জানি না। যেহেতু বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ, তাই কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে স্বচ্ছ ব্যালট বক্সে ভোট গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”

কায়সারের দেওয়া সেই চিঠি পর্যালোচনার জন্য নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন রির্টানিং কর্মকর্তা।

ওই চিঠি দেওয়ার একদিন বাদেই প্রার্থীদের ইভিএম কাস্টমাইজেশন কার্যক্রম দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

আরও পড়ুন: