ভুয়া ওয়ারেন্টে হাজতবাস, পুলিশের তদন্ত কমিটি

গাজীপুরের এক ব্যক্তি ‘ভুয়া ওয়ারেন্টে’ এক সপ্তাহ হাজতবাস করেছেন।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2022, 03:14 PM
Updated : 26 May 2022, 03:14 PM

পরে বিষয়টি আদালতের নজরে এলে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম মো. রেজাউল করিম চৌধুরী তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন। গত ১৯ মে তিনি কারামুক্ত হন।

মো. নাজমুল শেখ নামের এই ব্যক্তি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সালদিয়া এলাকার মো. হাফিজ উদ্দিন শেখের ছেলে।

এ ঘটনা তদন্তে গাজীপুরের পুলিশ সুপার একটি কমিটি গঠন করেছেন।

ঘটনাটি জানিয়ে বুধবার গাজীপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল শেখ বলেন, গত ১২ মে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর সদরের মনিপুর ভবানীপুর এলাকায় তার অফিসের (গোল্ডেন হারভেস্ট আইসক্রিম লিমিটেড) ফটক থেকে সাদা পোশাকের তিন ব্যক্তি পুলিশ পরিচয়ে তাকে কালীগঞ্জ থানায় নিয়ে যান। সেখানে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে বলে জানায়।

“আমি ওয়ারেন্টের কপি দেখতে চাইলে তারা আমাকে তাদের মোবাইল ফোন থেকে আমার নামে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখান। আমার নামে ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠানোর মতো কোন ঘটনা নাই বলে তাদের জানাই। কিন্তু তারা আমাকে কোনো সহযোগিতা না করে উল্টো দুর্ব্যবহার করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেন।”

নাজমুল শেখ বলেন, পরদিন তাকে কালীগঞ্জ থানা থেকে গাজীপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়। ১৪ মে গাজীপুর জেল হাজত থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

পরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম ১ নম্বর আদালত সিআর ১৭৮০/১৫ নম্বর মামলার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে না পেয়ে তাকে খালাস দেয় বলে জানান নাজমুল।

এ ঘটনার পর থেকে নাজমুলের পরিবার ও স্বজনরা আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে নাজমুলের সঙ্গে তার বাবা ও ভাই উপস্থিত ছিলেন।

নাজমুলের আইনজীবী মো. বাবুল মোড়ল জানান, ১৮ মে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ভিক্টিমের জামিন আবেদন করলে আদালত জানায় এই মামলা (নম্বর ১৭৮০/২০১৫) এ আদালতে নেই। ওয়ারেন্টের সিল-স্বাক্ষরও এ আদালতের নয়।

“পরে আদালতের বিচারক রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে ঘটনা ও ওয়ারেন্টটি ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় ভিক্টিমকে কারাগার থেকে মুক্তির নির্দেশ দেন।”

এ আইনজীবী আরও বলেন, ওয়ারেন্টটিতে ইস্যুকারীর মোবাইল ফোন নম্বরও ছিল যা ১০ ডিজিটের এবং আদালতের নাম লেখা রয়েছে ‘ঢাকা আদালত’। এ নামে কোনো আদালত নেই।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, “আদালত থেকে আমাদের কাছে ওয়ারেন্টের কপি এসেছে। তা পেয়ে আমরা তামিল করেছি মাত্র।”

এ বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ বলেন, “ঘটনাটি উদঘাটনে বুধবার বিকালে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনকে তদন্ত করতে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।”