বাগেরহাট পৌরসভার সাড়ে ৪ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

বাগেরহাটে কয়েকটি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে; যার মধ্যে সাড়ে চার কোটি টাকাই বাগেরহাট পৌরসভার।

অলীপ ঘটক বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2022, 12:54 PM
Updated : 26 May 2022, 12:54 PM

পাওনা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় ইতোমধ্যে ওজোপাডিকো পৌরসভার মালিকানাধীন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।

আগামী জুন মাসের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে তাদেরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে ওজোপাডিকো।

তবে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, নিয়ম মেনে সরকারি বরাদ্দের টাকা থেকে সমন্বয় করে আগের বকেয়া টাকা কিছু কিছু করে পরিশোধ চলমান রয়েছে।

বিল বকেয়া থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাগেরহাট পৌরসভা, জেলা পুলিশ অফিস, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ, সরকারি পিসি কলেজ ও কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল উল্লেখযোগ্য।

ওজোপাডিকোর বাগেরহাট কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) সাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওজোপাডিকোর বাগেরহাট পৌরসভার কাছেই বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। বাগেরহাট পৌরসভার নামে মোট ১৮টি মিটার রয়েছে। এই ১৮টি মিটারের বিপরীতে এই বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশ বিভাগের কাছে ২৫ লাখ টাকা, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের কাছে সাড়ে সাত লাখ টাকা, সরকারি পিসি কলেজের কাছে তিন লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে।

“সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে সব মিলিয়ে ওজোপাডিকোর পাওনা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা।”

তিনি বলেন, এর মধ্যে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডের একটি মিটার পৌরসভার মেয়রের নামে রয়েছে। ওই মিটারের বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় ইতিমধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।   

বকেয়া টাকা আদায়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বকেয়া টাকা পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান চলমান রয়েছে। এসব বকেয়া আট থেকে দশ বছর আগের। তারা নিয়মিত যে বিদ্যুৎ বিল তা পরিশোধ করছে ঠিকই; কিন্তু পেছনের বকেয়া টাকা পরিশোধের চেষ্টা করছে না।”

আগামী জুন মাসের মধ্যে সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ী বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে তাদেরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন ওজোপাডিকোর এই কর্মকর্তা।

বাগেরহাট পৌরসভার প্রধান নির্বাহী ও সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এই পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয় রাজস্ব আয়ের তহবিল থেকে। ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ফান্ড থেকে যে উপার্জন হয় তা দিয়ে পৌরসভার কর্মচারীদের বেতন ভাতাসহ অন্যান্য খরচ রাজস্ব আয় থেকে ব্যয় মেটানো হয়। আগামী জুনে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করে ওজোপাডিকোর বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার চেষ্টা করা হবে।

“ওজোপাডিকোর বাগেরহাট পৌরসভার কাছে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল পাওনা আছে তা কিন্তু প্রতি বছর কিছুকিছু করে পরিশোধ করা হচ্ছে।”

তবে দীর্ঘ বছরের বকেয়া সব টাকা এক সঙ্গে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী জুনে বকেয়া পাওনা পরিশোধের চেষ্টা থাকবে।

পুলিশ বিভাগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পাওনার বিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেন, “এই বিলকে বকেয়া বলা সমীচীন হবে না। এটা চলমান একটি প্রক্রিয়া। একটা সিস্টেমের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সকল বিল পরিশোধ করা হয়ে থাকে। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এই বিল যথানিয়মে পরিশোধ করা হবে।”