ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর বাবার নামে বিদ্যুৎ বিল আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক লাল সাহার বাবা মাখন লাল সাহা ৭৫ বছর আগে বাংলাদেশ ছেড়ে গেলেও তার নামে এখনও বিদ্যুৎ বিল আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাড়িতে। সেই বিল নিয়মিত পরিশোধও হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2022, 10:03 AM
Updated : 26 May 2022, 12:53 PM

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়ার ওই বাড়িতে এখন পরিবার নিয়ে বসবাস করেন শরীফুল ইসলাম মালদার নামে এক ব্যক্তি, যার বাবার বন্ধু ছিলেন মাখন লাল সাহা।

শরীফুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগে এই বাড়িতে থাকতেন মাখন লাল সাহা। আর ত্রিপুরার আগরতলা শহরের ধলেশ্বর এলাকায় থাকতেন শরিফুল ইসলামের বাবা নুরুল ইসলাম।

মাখন লাল আর নুরুল ইসলাম দেশভাগের পর তাদের বাড়ি পরিবর্তন করে নেন। নুরুল চলে আসেন বাংলাদেশে আর মাখন চলে যান ত্রিপুরায়।

শরীফুল ইসলাম বলেন, “বাড়ি বিনিময় হলেও প্রিয় বন্ধুর প্রতি ভালবাসার নিদর্শনস্বরূপ বিদ্যুৎ বিলে মাখন লাল সাহার নাম পরিবর্তন করেননি আমার বাবা। বন্ধুর স্মৃতি যেন মুছে না যায়, সেজন্য মৃত্যুর আগে বাবা আমাদের বিলের কাগজে নাম পরিবর্তন না করারও নির্দেশ দেন।”

গত ১৪ মে মাখন লাল সাহার ছেলে মানিক লাল সাহা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার বাবার নামে বিদ্যুৎ বিল আসার বিষয়টি আলোচনায় ওঠে।

শরীফুল ইসলাম বলেন, তার বাবা আগরতলা থেকে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কলেজে লেখাপড়া করতেন। সেই সুবাদে মানিক লালের সঙ্গে তার বাবার বন্ধুত্ব হয়। এরপর দেশ ভাগের সময় দুই বন্ধু তাদের বাড়ি বিনিময় করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টিএ রোডের মাজারগেট দিয়ে কাজীপাড়া এলাকায় ঢুকতেই মাখন লাল সাহার সেই আদিবাড়ির অবস্থান। ২৪ শতাংশ জায়গায় বাড়িটিতে এখন নুরুল ইসলাম মালদারের পরিবারের সদস্যরা বাস করেন। মাখন লাল সাহা যে বাড়িতে থাকতেন তার পাশে আরও কয়েকটি ঘরবাড়ি হয়েছে। গড়ে উঠেছে বেশ কিছু দোকান ঘরও।

মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে আনন্দে ভাসছেন নূরুল ইসলাম মালদারের পরিবারের সব সদস্য ও আশপাশের বাসিন্দারা। যদিও মানিক সাহার যাতায়াত নেই তার আদিবাড়িতে।

মালদার পরিবারের আরেক সদস্য সালমা আক্তার বলেন, “মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় আমরা অনেক আনন্দিত এবং গর্বিত। আমরা চাই তিনি যেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে আমাদের এবং তার পৈতৃক বাড়িটি দেখে যান। এই বাড়িতে তার বাবার অনেক স্মৃতি আছে।”

পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং এলাকাবাসীও এমন দাবি জানিয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিতরণ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার।

মাখন লাল সাহার নামে বিদ্যুৎ বিল আসার কারণ সম্পর্কে সবুজ কান্তি বলেন, বাড়ির বর্তমান বাসিন্দারা বিলের কাগজে গ্রাহকের নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেননি। তাই এখনও মাখন লাল সাহার নামেই বিল যাচ্ছে। বিল নিয়মিত পরিশোধও হচ্ছে। কোনো বকেয়া নেই। এখন যদি গ্রাহকের নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হয় তাহলে কাগজপত্র দেখে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।