থানায় অভিযোগ করেছিল তরুণ, জেল থেকে বেরিয়ে খুন করল সন্ত্রাসীরা

চাঁদা দাবির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করায় জেল থেকে বেরিয়ে এক তরুণকে প্রকাশ্যে ছুরি মেরে হত্যা করছে একদল সন্ত্রাসী।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2022, 03:53 AM
Updated : 22 May 2022, 04:46 AM

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে হোসেন মার্কেটের সামনে শনিবার রাতে হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত মো. আইমন (১৮) চৌমুহনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গণিপুরের নুর নবীর ছেলে।

হত্যাকাণ্ডের পর রাতেই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো. রাকিব (২০), আব্দুল হাই মিলনের ছেলে মো. পাভেল (২১) এবং আজাদ মিয়ার ছেলে নিরব (২০)।

নিহত মো. আইমন 

বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজীব জানান, নিহত আইমন চৌমুহনী বাজারে প্রধান সড়কের পাশে খোলা জায়গায় জুতা বিক্রি করতেন।

“তিন মাস আগে স্থানীয় সন্ত্রাসী রাকিব তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আইমন এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।”

পরে রাকিব ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তিন মাস কারাগারে থাকার পর গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পান তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তা রাজীব বলেন, রাকিব তার দুই সহযোগী পাভেল ও রিমনকে নিয়ে শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে চৌমুহনী বাজারে আইমনের পথ আটকায়।

“রাকিব তার কারাভোগের জন্য আইমনকে দায়ী করে। এক পর্যায়ে তিনজন মিলে আইমনকে ছুরি মেরে জখম করে। বাঁচার জন্যে সে পাশের একটি ফার্মেসিতে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েও তারা আইমনের গলার নিচে ছুরি মেরে জখম করে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।”

আইমনকে এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার পর হাতবোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে খুনিরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং প্রায় আধা ঘণ্টা চৌমুহনী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

পরে আটিয়াবাড়ি পুল এলাকা থেকে পুলিশ রাকিবসহ ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আইমনের মা রাতেই বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরিও উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধেই থানায় বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।

“চৌমুহনী বাজারে দোকানদারদের কাছে চাঁদা দাবি এবং চাঁদা আদায়ের মত ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে এবং কারা এই চাঁদাবাজদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে- এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তে যাদের নাম বেরিয়ে আসবে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।”
তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আইমন ছিলেন চতুর্থ। তার মৃত্যুর খবরে স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন আইমনের বাবা, মা ও বোনেরা।