‘কোচিং না করায়’ শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম

'কোচিং না করায়’ সাতক্ষীরার নলতার ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির এক শিক্ষার্থীকে 'গেস্ট টিচারের' নির্দেশে রড দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেতলে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2022, 01:15 PM
Updated : 14 May 2022, 01:15 PM

নির্যাতনের শিকার মো. সোলাইমান (২০) ইনস্টিটিউটের ল্যাব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পটুয়াখালীর দাসপাড়ার সোলাইমান শুক্রবারই ওই প্রতিষ্ঠানের হোস্টেলে উঠেন।

এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে পুরুষ হোস্টেলের ৪০৭ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন সোলাইমান। এ ঘটনার সাক্ষী প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েক শিক্ষার্থী।

কালিগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ওই শিক্ষার্থীকে ‘ব্যাপকভাবে মারধরে'র কথা উল্লেখ করে বলেন, তার শরীরের নানা স্থানে ক্ষত তৈরি হয়েছে।  

ইনস্টিটিউটের কয়েক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, কোভিড মহামারী শুরুর আগের বছর প্রতিষ্ঠানে গেস্ট টিচার হিসেবে যোগ দেন সাঈদী হাসান। পরীক্ষার খাতায় লিখতে না দেওয়া, ভাইভায় ফেল করিয়ে দেওয়াসহ নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে কোচিং করতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করেন।

এমনকি পরীক্ষার সময় গেস্ট টিচার সাঈদী হাসানকে নগদ টাকাও দিতে হয়। 'সোলাইমান তার কাছে কোচিং না করায় তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে' জানান এসব শিক্ষার্থী।

শনিবার দুপুরে সোলাইমান বলেন, "শুক্রবার রাতে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান ও রশিদ ইসলামকে দিয়ে আমাকে পুরুষ হোস্টেলের ৪০৭ নম্বর রুমে ডেকে নেওয়া হয়। এ সময় নাহিদ হাসান ও রশিদ ইসলামসহ আরও কয়েকজন সোলাইমানের হাত, পা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রড দিয়ে উপর্যুপরি পিটিয়ে থেতলিয়ে দেয়।"

ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. ফারুকুজ্জামান বলেন, "সোলাইমানকে নির্যাতনের ঘটনাটি সত্য। এজন্য দ্রুতই তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।"

মারধরের পর শনিবার ভোররাতে গুরুতর আহত অবস্থায় দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোলাইমানকে নিয়ে যায় ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েক শিক্ষার্থী। এখনও অসুস্থবোধ করছেন জানিয়ে এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি সোলাইমান।

তিনি বলেন, "আমি এখানে একা থাকি। নিজে খুব অনিরাপদ বোধ করছি।" 

কালিগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, তিনি সোলাইমানকে থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করতে বলেছেন।

"আমি তাকে থানায় অভিযোগ দিতে বলে এসেছি। যদি অভিযোগ পাই, তাহলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সোলাইমানের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত জখম এবং ফোলা থাকলেও তাকে শঙ্কামুক্ত বলছেন দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. আব্দুল লতিফ।

"রাতের চেয়ে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখন তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারছেন। আরও কিছু সময় চিকিৎসকের অধীনে থাকতে হবে।"

গেস্ট টিচার সাঈদী হাসানের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।