কুষ্টিয়ায় যুব জোটের নেতাকে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জাসদ (ইনু) সমর্থক জাতীয় যুব জোটের এক নেতার হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2022, 08:20 AM
Updated : 12 May 2022, 08:36 AM

উপজেলার আল্লারদর্গার বয়েজমোড় এলাকায় বুধবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে দৌলতপুর থানার ওসি জাবীদ হাসান জানান। 

নিহত মাহবুব খান সালাম (৪০) উপজেলার আমদহ গ্রামের আলাউদ্দিন খানের ছেলে এবং জাতীয় যুব জোটের দৌলতপুর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

ঘটনার বর্ণনায় প্রত্যক্ষদর্শী ভ্যান চালক রিয়াজুল বলেন, “আল্লারদর্গা বাজার থেকে আমার ভ্যানে করে সালাম ভাই আমদাহ গ্রামে বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। পথে এক ব্যক্তি ভ্যানের গতিরোধ করে সালাম ভাইকে ভ্যান থেকে নামতে বলেন। 

“সালাম ভাই ভ্যান খথেকে নামা মাত্রই সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আরও ৮/১০ জন লোক তাকে ঘিরে ফেলে মারধর করতে শুরু করে।”

এদিকে সালামের স্ত্রী সিমুয়ারা খাতুনের অভিযোগ, সালাম মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।

সিমুয়ারা সাংবাদিকদের জানান, বুধবার কুষ্টিয়া আদালতে কয়েকজন মাদক কারবারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ওই বিষয়ে তার স্বামী নিজের ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেয়। এর কিছুক্ষণ পরই কয়েকজন ব্যক্তি সালামকে খুঁজতে বাড়িতে যায়। ওই সময় সালাম বাড়িতে ছিল না। তবে ওই ব্যক্তিদের গতিবিধি সন্দেহজনক  হওয়ায় বিষয়টি দৌলতপুর থানায় জানান তারা।

তিনি বলেন, “সালাম মাদক ব্যবাসায়ীদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বুলবুল আহমেদ চৌধুরী টোকনের সঙ্গে সালামের বিরোধ চলছিল। হাসপাতালে সালামের যতক্ষণ জ্ঞান ছিল সে বলছিল- টোকেন ও তার চাচাতো ভাই সেলিম চৌধুরীর লোকজন রাতের আঁধারে হঠাৎ এই হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সালামকে কুপিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে।”

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল আলম বলেন, “সালামকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান।

“সালামের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের গুরুতর আঘাতে চিহ্ন ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথামিকভাবে ধারণা করছি।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে টোকন চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আর তার চাচাতো ভাই দৌলতপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী বলেন, “রাজনৈতিকভাবে আমাকে ও আমার পরিবারকে হেয় করতে প্রতিপক্ষের লোকজন এসব কথা ছড়াচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের মত নোংরা রাজনীতি আমি করি না।”

ওসি বলেন, সালাম হত্যায় জড়িত সন্দেহে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আটক করেছে পুলিশ। তবে এখনও কেউ মামলা করেনি। পুলিশ ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। জড়িতদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে।