নরসিংদীতে শিক্ষার্থীদের পেটালেন অধ্যক্ষ, আটকের পর মুচলেকায় মুক্তি

নরসিংদীর পলাশে ১৬ শিক্ষার্থীকে অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ দিয়ে পেটানোর ঘটনায় একটি কলেজের অধ্যক্ষকে আটকের পর মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

নরসিংদী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2022, 05:00 PM
Updated : 10 May 2022, 05:00 PM

উপজেলার সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষকে মঙ্গলবার দুপুরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে পলাশ থানার ওসি মো. ইলিয়াস মিয়া জানান; সোমবার রাক ৮টার দিকে তাকে আটক করা হয়েছিল।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে একটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পিটানোর ঘটনা ঘটে; এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য।

ছাত্রদের থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত বছর কলেজটির উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফরম পূরণ স্থগিত করেছিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।

কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে প্রতিদিন ছয়টি বিষয়ে পড়ানো হয়। রোববার শেষ ক্লাসের শিক্ষক ক্লাস নিবেন না এমন খবরে অধিকাংশ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। তবে পরে শিক্ষক ক্লাসে গেলে কয়েকজন ক্লাসে উপস্থিত হন।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সোমবার শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হলে ক্লাস শুরু হয়। বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে রোববারের ক্লাস না করা শিক্ষার্থীদের দাঁড় করান।

এ সময় অধ্যক্ষ ওই পাইপ দিয়ে শাকিব, সিজান, আদনান, সোহেল, শিফাত, নয়ন, তাহসিন, আশরাফুল, আমিরুল, তাসফিকসহ ১৬ শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আহতের ছবি পোস্ট করে অধ্যক্ষের বিচার দাবি করলে অল্প সময়ে এটি ভাইরাল হয়।

স্বাধীনুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী ফেইসবুকে লিখেন, “শিক্ষকরা গুরুজন, বাবা-মার মতো। সেখানে কলেজের অধ্যক্ষ হয়ে এভাবে মারছে। আমার বাবা-মা তথা কেউই কোনোদিন এভাবে মারেনি। আমি আজ সারাটা ক্লাস শুধু ভাবছি আমার সঙ্গে কী হল! শুধু যে আমার সঙ্গে তাই নয়। ক্লাসের অধিকাংশই এই আঘাতের শিকার হইছে – কেউ কম বা কেউ বেশি।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আমির হোসেন বলেন, “আমি শিক্ষার্থীদের শাসন করেছি। এখন কেউ কেউ এটাকে ইস্যু বানিয়ে পরিবেশ ঘোলা করার চেষ্টা করছে।”

ছাত্র পিটানোর ঘটনা নিয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম মিত্রের কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি বিস্তারিত জানেন না বলে জানান।

তিনি বলেন, “ছাত্র পিটানো কেন, কোনো শিক্ষক ছাত্রকে তিরস্কার করে কথা বলার বিধানও আইনে নেই। ঘটনাটি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিলন কৃষ্ণ হালদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান গৌতম মিত্র।

ওসি বলেন, কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবেন না এই মর্মে মুচলেকা নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে অধ্যক্ষকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।