‘আমি তোর মা, আর মারিস না বাবা, মরে যাবোরে’

‘সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায়’ সত্তরোর্ধ্ব মাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধিমোর্শেদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2022, 04:29 PM
Updated : 5 May 2022, 04:29 PM

ঈদের দিন মঙ্গলবার দিনাজপুর শহরের বড়বন্দর এলাকায় নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ও ওই বৃদ্ধা নারীর স্বজনরা জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তার রাজিব আলী ডন নীলফামারীর সৈয়দপুরে ন্যাশনাল ব্যাংকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পদে চাকরিরত আছেন।

প্রায় ৭৫ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষিকাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধা সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলে রাজিব শহরের বড়বন্দরে তার সঙ্গেই থাকেন এবং তার কাছেই খান। অনেক দিন থেকে বাড়িসহ পুরো জমি তাকে লিখে দিতে চাপ দিতে থাকেন।

ঈদের দিন রাত ৯টার দিকে তাকে সম্পত্তি লিখে দিতে বলেন এবং এক পর্যায়ে তার (মা) ব্যবহৃত লাঠিটি নিয়ে বেধরক পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দেন এবং পুরো শরীরে উম্মাদের মত পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন বলে মায়ের অভিযোগ।

তিনি বলেন, “অসহ্য যন্ত্রণায় এক পর্যায়ে ছেলেকে বলি, আমি তোর মা, আমাকে আর মারিস না বাবা, আমি মরে যাবোরে। তারপরও সে থামেনি। মারার পর আমাকে ঘরে সারা রাত তালাবন্ধ করে রেখে দেয়।”

নির্যাতিতা শিক্ষিকার বড় মেয়ে বলেন, “ঘটনার দিন মায়ের এই অবস্থার খবর আমরা কেউ জানি না। আমি পরদিন সকালে আমার মৃত বড় ভাইয়ের ছেলের ফোনে জানতে পেরে ৯৯৯ -এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তায় মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। মাকে মেরে পা থেকে মাথা পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করেছে।”

এই শিক্ষিকার ছোট মেয়ে বলেন, “এর আগে মাকে ফুসলিয়ে ৩ শতক জমি লিখিয়ে নিয়েছে। এখন অবশ্ষ্টি বাড়িসহ ১৬ শতক জমি লিখিয়ে নিতে এই নির্যাতনের পথ বেছে নেয় রাজিব। এর আগে ১৫ রোজায় একবার মেরেছিল। সেসময় পুলিশের উপস্থিতিতে সবার সামনে ক্ষমা চায়লে মা ক্ষমা করে দেন।”

বৃদ্ধা শিক্ষিকার এই দুই মেয়ে মায়ের উপর এই নির্যাতনের জন্য তাদের ভাইয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন। 

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন জানান, এই ঘটনায় রাজিব আলী ডন ও তার স্ত্রী খালেদা বেগমকে আসামি করে ভিকটিমের মেয়ে থানায় বুধবার রাতে একটি মামলা করেছেন। মামলা রেকর্ড করার পরপরই প্রধান আসামি রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।