পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা

মহামারীর কারণে প্রায় দুই বছর পর ঈদের ছুটিতে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের মতো কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতও পর্যটকদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2022, 04:49 AM
Updated : 5 May 2022, 05:03 AM

ঈদের দ্বিতীয় দিন বুধবার সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে প্রায় ১৮ কিলোমিটার এলাকায় পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে। সমুদ্রের সৌন্দর্য্য উপভোগ করার পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন দোকানগুলোতে কেনাকেটাও করছেন তারা। সব মিলিয়ে পুরো সৈকত জুড়ে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

ঈদের ছয়দিন আগেই কুয়াকাটার হোটেল মোটেলের প্রায় ৮০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে যায়। বেশিরভাগ পর্যটক ঈদের পরদিন থেকে আসতে শুরু করে।

তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও সেবা দিয়ে যাচ্ছে নিয়েছে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পৌর কর্তৃপক্ষ।

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোশিয়েসন সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ জানান, পর্যটকদের সুবিধার্থে হোটেল মোটেল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সকল ধরনের সেবা ও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহ পঞ্চাশ হাজারেও বেশি ভ্রমন পর্যটকে কুয়াকাটা মুখরিত থাকবে বলে ধারণা করছেন তারা।

কুয়াকাটা গ্রিন ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কুয়াকাটা সমুদ্র বাড়ি রিসোর্টের পরিচালক আবুল হোসেন রাজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঈদের পর থেকেই মূলত দর্শনীয় স্থান নারিকেল বিথী, ফয়েজ মিয়ার বাগান, জাতীয় উদ্যান (ইকোপার্ক), শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার পর্যটকদের পদভারে দিন রাত মুখরিত হয়ে উঠেছে। সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে প্রায় ১৮ কিলোমিটারে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।

তিনি বলেন, “পর্যটকদের গাইড করতে আমাদের গাইডগুলো আগে থেকেই বুকিং ছিল। তাই গাইডের সদস্যরা পর্যটকদের সেবা দিতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্পটে ভ্রমণ করতে স্পিড বোটগুলো ব্যস্ত সময় পার করছে।”

কুয়াকাটা ভূইয়া মার্কেটের সভাপতি মো. নিজাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোভিড মহামারীতে দুই বছরে পর্যটকরা তেমন আসেনি কুয়াকাটায়। তবে এ বছর ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় হয়েছে। ছোট-বড় দোকানীরা পর্যটকদের কাছে বিকিকিনি করে ব্যস্ত সময় পার করছেন।”

ঢাকা থেকে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে আসা পর্যটক মো. শফিকুল ইসলাম মোবাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা চার বন্ধু মিলে ঈদের ছুটিতে প্রথমবারের মত কুয়াকাটায় ঘুরতে এলাম। অনেক মজা করছি। সাগরের বিশালতা দেখে মুগ্ধ আমরা। অনে জায়গায় ঘুরছি। দীর্ঘ সৈকতে সময় কাটাচ্ছি; এ এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা।”

দিনাজপুর থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসা পর্যটক কামরুজ্জামান প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা পরিবারের সকলে এবার ঈদের ছুটিতে ঘুরতে এসেছি কুয়াকাটায়। আসলে স্থানটি মনোমুগ্ধকর। এখানে দীর্ঘ সি-বিচ, বিশাল সমুদ্র। ফাতরার বন, ঝাউবাগান ঘুরলাম। বেশ ভালই লাগছে। এখানে না আসলে বোঝাই যায় না প্রকৃতির লীলা।”

এদিকে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবকটি স্পটে কয়েক স্তরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও থানা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও কাজ করছে পুলিশ।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসপি মো. আবদুল খালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঈদ পরবর্তী সময়ে পর্যটকদের ভিড়ের বিষয়টি মাথায় রেখেই তাদের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে থানা পুলিশের সদস্যদেরও। এছাড়াও মেডিকেল টিম, ফায়ার সাভির্স ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি টিম সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন।