ঈদের দিন মঙ্গলবার বিকালে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে স্থানীয় আস্তানগর কবরস্থানে নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে দুপুরের পর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পান স্বজনরা।
সোমবার বিকালে আস্তানগর গ্রামে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় চারজন নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হন।
এই সংঘর্ষে নিহতরা হলেন আস্তানগর গ্রামের মতিয়ার রহমান (৪৫), লাল্টু মন্ডল (৪২), আবুল কাশেম (৬৫) ও আব্দুর রহিম মালিথা (৭০)।
ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে গেছে। নিহতদের পরিবারে চলছে স্বজন হারানোর আহাজারি। ঈদের আনন্দ করার কোনো আয়োজন নেই।
নিহত মতিয়ারের চাচাত ভাই সাইদুল ইসলাম ঢাকা থেকে এসেছেন স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে।
সাইদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বছরের দুই ঈদে অনেক কষ্ট হলেও বাড়ি আসি সবার সাথে আনন্দ করতে। এবারের ঈদে যতটুকু আনন্দ হতো তারচেয়ে দ্বিগুণ বেশি মনকষ্ট নিয়ে ফিরে যেতে হবে।
“গ্রামের প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব কে যে কোথায় আছে তা বলা মুস্কিল। যেদিকে চোখ যাচ্ছে শুধু পুলিশ আর পুলিশ। মাঝেমধ্যে দুই একজন মহিলাকে এবাড়ি থেকে ওবাড়ি যেতে দেখা যাচ্ছে। চরম আতঙ্কের ছাপ তাদের চেহারায়।”
ঘটনা তদন্তে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খায়রুল আলমসহ পুলিশের বিভিন্ন ক্রাইম ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ৯ নম্বর ঝাউদিয়া ইউনিয়নের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) মেহেদী হাসান এবং ঝাউদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কেরামত আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার ও জমিজমা, ধর্ম প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি জলমহাল দখল পাল্টা দখলের ঘটনা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুলশিক্ষক বলেন, প্রায়ই স্থানীয়দের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে হামলা পাল্টা হামলা, ভাংচুর লুটপাট চলে। ঈদের একদিন আগে আনন্দ-উৎসবের বদলে স্বজন হারানোর বেদনায় শোকার্ত হয়েছে পুরো গ্রামের পরিবেশ।
এই ঘটনায় এখনও কেউ মামলা করতে থানায় যায়নি বলে জানান ওসি রতন।