সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এবারের জামাতে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন বলে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান।
১৮২৮ সালে শুরুর পর থেকে এবার ১৯৫তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় শোলাকিয়া ময়দানে। জামাত পরিচালনা করেন স্থানীয় বড় বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ।
সকাল সাড়ে ৯টায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরুর আগেই বিশাল ঈদগাহ ময়দান পরিপূর্ণ হয়ে যায়। রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে তিনবার বন্দুকের গুলি ফুটানো হয়। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এদিকে ঈদ জামাতে দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একটি ট্রেন ছেড়ে আসে ময়মনসিংহ থেকে ও অপরটি ছেড়ে আসে ভৈরব থেকে।
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসাবে ঈদ জামাতে শুধু টুপি, মাস্ক ও জায়নামাজ বহন ও শহরে যান চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। ফলে বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিরা। তাদের সহায়তার জন্য মাঠে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করে।
এছাড়াও মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে ছিল সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। আর আকাশে উড়েছে পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মসজিদের ইমাম আব্দুস সালাম গোলাপ জানান, মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারী প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সনে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির উপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছর শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে পরিণত হয়ে নাম ধারণ করেছে শোলাকিয়া মাঠে।
এ মাঠে একসঙ্গে দুই লাখেরও বেশি মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করেন। প্রায় সাত একর আয়তনের মাঠটিতে ২৬৫টি কাতার রয়েছে।