সেই ১৮ জেলে পরিবারে ঈদের সামগ্রীসহ টেকনাফের ইউএনও

দেড়মাস আগে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ধরে নেওয়া ১৮ জেলের পরিবারে ঈদের সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু।

জসিম মাহমুদ, টেকনাফ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2022, 01:26 PM
Updated : 2 May 2022, 01:26 PM

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার তিনি এসব খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

গত ১৫ মার্চ বিকালে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী – বিজিপি সদস্যরা চারটি নৌকাসহ ১৮ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যায়, যারা সাগরে মাছ শিকার করে ফিরছিলেন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে একাধিকবার মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের ফেরত আনা যায়নি।

জেলেদের প্রতি পরিবারে দেওয়া সামগ্রীর মধ্যে ছিল সেমাই ২ কেজি, লাচ্ছা সেমাই ৪ প্যাকেট, দুধ ১ কেজি, ছোলা ৪ কেজি, পোলাও চাউল ৬ কেজি, চিনি ৩ কেজি এবং সয়াবিন তেল ২ লিটার।

সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরু নিজে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ায় গিয়ে জেলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ১৮টি পরিবারের কাছে একটি করে বস্তাভরতি সামগ্রী হস্তান্তর করেন।

বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভবসিন্ধু রায়, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সালাম, জালিয়াপাড়া মৎস্যজীবী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি প্রমুখ।

এ সময় ইউএনও খসরু বলেন, “আমি নবাগত; তাই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ১৮ জেলে পরিবারের মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ওই পরিবারগুলোর কাছে ছুটে গিয়ে ঈদের খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছি।”

আগামীতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, জেলেদের দ্রুত দেশে ফেরত আনার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের পক্ষ থেকে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, পরিবারের আয়-রোজগারের একমাত্র উপার্জনক্ষম লোকজন যখন মিয়ানমারে বন্দি, ঠিক তখনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী পাওয়ায় জেলে পরিবারগুলোতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সহায়তা নিতে আসা মোহাম্মদ আকবরের স্ত্রী মোমিনা বেগম বলেন, “স্বামীকে ধরে নেওয়ার এক মাস পর জন্ম হয় ছেলে নোমানের। বাবা- ছেলের দেখা হয়নি। খাদ্যগুলো দেওয়ার জন্য ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ। তবে আমি আমার স্বামীকে ফেরত পেতে চাই।”