কিশোরী ফুটবলারকে ‘ধর্ষণ’ কাণ্ডে ধর্ষণচেষ্টার মামলা: ছাত্রলীগ নেতা রিমান্ডে

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় জাতীয় অনুর্ধ্ব-১৭ দলের কিশোরী ফুটলারকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার দুদিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2022, 12:05 PM
Updated : 28 April 2022, 12:05 PM

জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম রাজিব হাসান বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আসামি ওয়াহিদুল আলম ফয়সাল ফকির নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নান্দাইল পৌর শহরের পাছপাড়া গ্রামের লাল মিয়া ফকিরের ছেলে।

আদালতে পুলিশের পরিদর্শক প্রসুন কান্তি দাস বলেন, ডিবি পুলিশ ওই আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড চাইলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য বেলা ১১টার দিকে ওই কিশোরীকে বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পরিদর্শক প্রসুন।

নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ধর্ষণ নাকি ধর্ষণচেষ্টা, বিষয়টি নিশ্চিত হতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বুধবার রাতে মামলাটি থানা থেকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি সফিকুল ইসলাম জানান।

এই ঘটনায় শনিবার ওই নারী ফয়সাল ও তার দুই সহযোগীকে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগ করলেও পুলিশ ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেন বলে অভিযোগ করেছেন।

গলায় ছুরি ধরে ফয়সাল তাকে ধর্ষণ করে বলে কিশোরীর ভাষ্য।

‘ধর্ষণের সময়’ কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকেও ফয়সাল ছুরি দেখান বলে রহিম অভিযোগ করেছেন।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেওয়ার সংবাদটি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়। পরে বুধবার ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কিশোরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্প্রতি ফয়সালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ফয়সালের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। কিশোরী কলেজে যাওয়া-আসার সময় ফয়সাল তার খোঁজখবর নিতেন।

“শুক্রবার উপবৃত্তির ফাইলে স্বাক্ষর দেওয়ার কথা বলে ফয়সাল আমাকে কলেজে ডেকে নেন। কলেজে গেলে ফয়সাল আমাকে মুখ চেপে গলায় চাকু ধরে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও করে রাখেন। এতে সহযোগিতা করেন তার সহযোগী আলামিন ও অজ্ঞাত আরও একজন। মাটিতে ফেলে আলামিন আমার পা ধরে রাখে। ঘটনা কাউকে বললে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন ফয়সাল। ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আমার পরিবার।”

বাড়ি ফিরে সবাইকে বলার পর কিশোরী পুলিশে অভিযোগ দিতে যান।

কিশোরীর বক্তব্য, “ওসি স্যারকে সবকিছু খুলে বলার পর তারা ‘ধর্ষণ’ মামলার বদলে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলা নিয়েছে। পুলিশ আমাদের সঙ্গে অবিচার করেছে। তারা এটা কেন করেছে বুঝতে পারছি না “

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো.আহমার উজ্জামান বলেন, গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি তদন্ত চলছে। ভিকটিমের ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত পেলে সেই অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।