ভ্রমণ ভিসা চালু: বেনাপোল বন্দরে যাত্রী পারাপার বেড়েছে

করোনাভাইরাস মহামারীতে দুবছর বন্ধ থাকার পর ভ্রমণ ভিসা পেয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বিপুল সংখ্যক যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক যাত্রীর কোলাহলে মুখরিত হচ্ছে প্রধান স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক এই চেকপোস্ট।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2022, 10:38 AM
Updated : 28 April 2022, 10:38 AM

মহামারীতে মাঝখানে কিছু সময় বাদে পুরো সময়ই চিকিৎসা ভিসা চালু ছিল; বন্ধ ছিল ভ্রমণসহ অন্যান্য ভিসা। এখন ভ্রমণ ছাড়াও রয়েছেন ঈদের কেনাকাটার বিষয়। তাই সব মিলিয়ে ভিড় লেগেই আছে।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি মোহাম্মাদ রাজু বলেন, করোনাকালে দৈনিক ৪-৫শ যাত্রী পারাপার হলেও গত তিনদিনে তা বেড়ে ৪ হাজার ছাড়িয়েছে।

"চলতি মাসের ১৮ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত আট দিনে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে ২০ হাজার ৪৮০ জন দেশি-বিদেশি পারাপার হয়েছেন। এর মধ্যে ভারতে বাংলাদেশি গেছে ১০ হাজার ৫৮৫ জন; ভারতসহ অন্য বিদেশি যাত্রী গেছে ২ হাজার ৮৪৯ জন। একই সময়ে ভারত থেকে ফিরেছেন বাংলাদেশি ৫ হাজার ১০৯ জন এবং  ভারতসহ অন্য দেশের ১ হাজার ৯৩৭ জন। গত দুই সপ্তাহে যাত্রী ব্যাপক হারে বেড়েছে।"

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে যেয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়। ইমিগ্রেশন থেকে দীর্ঘ লাইন চলে গেছে ২৫০ গজ বাইরে। বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে যাত্রীদের সাময়িক বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকলেও ভিড়ের কারণে সে উদ্যোগ ব্যর্থ হচ্ছে। টার্মিনালের ভেতরে মাত্র ৫০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ এ পথে প্রতিদিন তিন হাজার থেকে চার হাজার যাত্রী পারাপার হচ্ছে। যাত্রীরা টার্মিনাল ফি দিয়েও বাইরে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ড তাপদহে পুড়ছে। দুর্ভোগে পড়ছে শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ সবাই।

বরিশাল থেকে আসা নুরুজ্জামান তালুকদার (৪০) বলেন, “রাত জেগে বেনাপোল এসেছি। এখানে এসে দেখছি দীর্ঘ লাইন। এই লাইন থেকে বের হতে প্রায় ৩ ঘণ্টা লেগেছে। আবার প্রত্যেকের কাছ থেকে 'যাত্রী সেবার' নামে টার্মিনাল ফি নিয়েছে ৫০ টাকা। অথচ এখানে যাত্রী সেবার কোনো বালাই নেই।”

মাদারীপুরের আশিকুল ইসলাম (৪৫) বলেন, “বাচ্চাকাচ্চার ঈদের ‘মার্কেট’ করতে কলকাতা যাচ্ছি। দুবছর যেতে পারিনি। কালকেই ফিরে আসব।”

ভারত ফেরত ঢাকার ইব্রাহিম খলিল বলেন, “টুরিস্ট ভিসায় ভারত গেছিলাম। পরিবার পরিজনের কিছু ঈদের গিফট কিনে লইয়াইছি। প্রতিবছর কলকাতা নিউমার্কেট থেকে ‘মার্কেটিং’ করি। দুবছর করোনায় যেতে পারিনি।”

ইমিগ্রেশনের ওসি মোহাম্মাদ রাজু জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ভারত সরকার 'ভ্রমণ ভিসা' দেওয়ায় যাত্রী সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। ইমিগ্রেশনে যাত্রীসেবার মান বেড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা দ্রুত যাতে ভারতে প্রবেশ করতে পারে তার জন্য ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।