ঈদযাত্রা: ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে খুলেছে ২ ফ্লাইওভার

কাজ শেষ না হলেও ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নবনির্মিত দুটি ফ্লাইওভার; এতে কিছুটা স্বস্তি মিলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2022, 12:21 PM
Updated : 25 April 2022, 12:21 PM

কোনো আনুষ্ঠানিকতা না করেই সোমবার দুপুর ২টার দিকে একসঙ্গে গাজীপুরের নাওজোড় ও সফিপুর বাজারের উড়ালসড়ক দুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

ফ্লাইওভার প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপক সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, “ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যেন ভোগান্তি না হয় এজন্য যানবাহন চলাচলের জন্য ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হয়েছে।“

গাজীপুর-নবীনগর রুটে চলাচলকারী নিরাপদ পরিবহনের চালক স্বপন বলেন, ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদের ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত অনেকটা স্বস্তিদায়ক হবে।

রাজধানীর সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের ২৩ জেলার যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থিত চন্দ্রা, ভোগড়া বাইপাস ও চান্দনা চৌরাস্তা। প্রতি ঈদে এসব সড়কে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। যানজটে পড়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এবার এ ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় যানজট অনেকাংশে লাঘব হবে বলে মনে করছেন পরিবহন চালক ও সড়ক বিভাগ।

সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত চারটি প্যাকেজে কাজ হচ্ছে। জয়দেবপুরের ভোগড়া মোড় থেকে কালিয়াকৈরের হাইটেক পার্ক পর্যন্ত ১ নম্বর প্যাকেজের অধীন নাওজোর ও সফিপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে।

১ নম্বর প্যাকেজের প্রজেক্ট ম্যানেজার এবং সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, এবার গত দুই বছরের তুলনায় বেশি মানুষ ঢাকার বাইরে ঈদ করতে যাবে। তাই প্রত্যেকটা মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। সেই অনুযায়ীই কাজ হয়েছে।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮১০ মিটার দীর্ঘ নাওজোর ফ্লাইওভার ও ২০১৯ সালের জুন মাসে ১০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার ২৬২ মিটার দীর্ঘ সফিপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ফ্লাইওভার দুটির ৯৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রেলিংয়ের কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে।

সওজ নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে ওই ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য সোমবার দুপুর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। দুটি উড়াল সড়কের সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলেও সেখানে কার্পেটিং করা হয়নি। লাইটিংসহ বেশকিছু কাজ এখনও বাকি আছে।

দুটি ফ্লাইওভারের ৯৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, তাই ঈদের পর ফ্লাইওভারটি আর বন্ধ করার প্রয়োজন হবে না। যতটুকু কাজ বাকি আছে স্বল্প সময়ের জন্য এক লেন বন্ধ করেই বাকি কাজ সম্পন্ন করা যাবে বলে জানান এই প্রকৌশলী।

গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া স্টার লাইট সুয়েটার কারখানার শ্রমিক আবুল কাসেম বলেন, তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। গত দুই বছর করোনাভাইরাসের প্রভাবের কারণে ঈদে বাড়ি যেতে পারেননি।

“এবার আমাদের মতো বহু কর্মজীবী মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে ছুটে যাবে গ্রামের বাড়ি। ঈদের ছুটি শুরু হলেই মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সড়কপথে। এবারও সেই আশঙ্কাতেই আছেন ঘরমুখো মানুষ।”

আবুল কাসেম আরও বলেন, অধিকাংশ এলাকাতে সড়কের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হলেও যানবাহনের চাপের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নির্মিত এসব ফ্লাইওভার নির্মাণ হওয়ায় যাত্রীদের পথে ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হবে।

সালনা কোনাবাড়ি হাইওয়ে থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার দুটি খুলে দেওয়ায় ঈদে উত্তরবঙ্গগামী মানুষের যানজটের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে। এবার যাত্রা নির্বিঘ্ন হবে।

আরও পড়ুন: