খাল থেকে মাটি তুলে রাস্তা নির্মাণ, ধসের আশঙ্কা

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার খাল থেকে মাটি তুলে একটি সড়ক নির্মাণ চলছে; এতে কোনো ধরনের সুরক্ষা দেয়াল না থাকায় খাল পাড়ের রাস্তাটি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2022, 08:09 AM
Updated : 25 April 2022, 08:09 AM

কাশিয়ানী উপজেলা এলজিইডি অফিস জানায়, পাঁচ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার বেথুড়ী ইউনিয়নের বিদ্যাধর এলাকায় দেবাশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স কামরুল অ্যান্ড ব্রাদার্স’ কাজটি বাস্তবায়ন করছে।

বিদ্যাধর গ্রামের বাসিন্দা হানিফ উদ্দিন খসরু বলেন, “ঠিকাদার রাস্তার পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল থেকে ভেকু দিয়ে মাটি তুলে রাস্তায় দিচ্ছেন। এতে রাস্তা ধসে আবার খালের মধ্যে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা ঠিকাদারের লোকজনকে রাস্তা সংলগ্ন খাল থেকে মাটি তুলতে নিষেধ করলেও তারা তা শুনছেন না।”

ওই গ্রামের মো. মাসুম আলী খান বলেন, “রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও অযত্নে পড়ে ছিল। এ সড়ক দিয়ে আমাদের চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। নতুন করে রাস্তাটি নির্মিত হলে আমাদের চলাচল, পণ্যপরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

“কিন্তু রাস্তা নির্মাণে রাস্তার ঠিক পূর্বপাশ ও পশ্চিমপাশের খাল থেকে মাটি তোলা হচ্ছে। এখানে কোনো প্রটেকশন ওয়াল রাখা হয়নি। তাই এই মুহূর্তে ভারি বৃষ্টি হলেই রাস্তা খালের মধ্যে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামরুল অ্যান্ড ব্রাদার্সের মো. মেহেদী হাসান খাল থেকে মাটি তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, “খালের মাঝ থেকে মাটি তোলা হচ্ছে; রাস্তার কোল ঘেঁষে নয়। এতে রাস্তার কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। মাটির জন্য যে টাকা বরাদ্দ তাতে অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে কাজ করা সম্ভব নয়। এমনিতেই কাজটি করে অনেক লোকসান হচ্ছে। তাই খাল থেকে মাটি নিয়ে সহজে কাজ করা হচ্ছে।”

এ বিষয়ে কাশিয়ানী উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। মাটির জন্য ঠিকাদারকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ কাজে খাল থেকে মাটি নেওয়ার সুযোগ নেই। রাস্তা সংলগ্ন খাল থেকে মাটি তুললে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।“

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান বলেন, এভাবে কাজ করা ঠিক হচ্ছে না। প্যালাসেটিংস না দিয়ে এভাবে কাজ করলে রাস্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তারা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে পারত। এতে এক সঙ্গে খাল খনন ও রাস্তার কাজ করা সম্ভব হতো।”

এ কাজের জন্য পর্যাপ্ত টাকা নেই বলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “মাটির জন্য টাকা বরাদ্দ আছে। ঠিকাদার তা সত্ত্বেও কেন খাল থেকে মাটি নিচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।”