বিসিসি কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে

বরিশাল সিটি করপোরেশনের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সিটিরই এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2022, 06:35 PM
Updated : 24 April 2022, 06:35 PM

রোববার দুপুরে নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বৈদ্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে করপোরেশনের সড়ক পরিদর্শক রাজিব হোসেনের অভিযোগ।  

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবের বিচারের দাবিতে বিএম কলেজ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা।

পরে রাত ১১টায় প্রশাসনের আশ্বাসে তারা সড়ক ছেড়ে ফিরে যান।

অন্যদিকে, বিকাল ৪টার দিকে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কের সিএ্যান্ডবি রোড অবরোধ করেন কাউন্সিলর বিপ্লবের সমর্থকরা। তারা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে দক্ষিণাঞ্চলমুখী প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ভোগান্তিতে পরে সাধারণ মানুষ।

প্রশাসনের অনুরোধে ইফতারির আগে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সড়ক থেকে সরে যান কাউন্সিলর বিপ্লব। জিয়াউর রহমান বিপ্লব বরিশাল নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সড়ক পরিদর্শক রাজিব হোসেন বলেন, ‌সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ হচ্ছে কিনা তা তদারকির দায়িত্ব সড়ক পরিদর্শকদের। দুপুরে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বৈদ্যপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের নকশা যাচাই করতে গেলে ভবন মালিক স্থানীয় কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবকে টেলিফোন করেন।

“ভবন মালিক আমাকে ফোনটি ধরিয়ে দিলে অপরপ্রান্ত থেকে কাউন্সিলর বিপ্লব জানতে চান তার  অনুমতি ছাড়া কেন প্ল্যান চেক করতে গিয়েছি। এ সময় তিনি আমাকে ও ভবন মালিককে স্থানীয় হোসাইনিয়া মাদ্রাসায় ডেকে নেন। সেখানে বসে তিনি (কাউন্সিলর) আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং নানাভাবে হুমকি ধামকি দেন। খবর পেয়ে সিটি কর্পোরেশনের অন্য স্টাফরা আমাকে উদ্ধার করেন।”

২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব বলেন, ভবনটি একজন শিক্ষকের। তিনি ভবন নির্মাণ শুরুর পর থেকেই সিটি কর্পোরশনের স্টাফ পরিচয়ে তাকে প্রায়ই বিরক্ত করছে।

“আমি শুধু তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেছি। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখা কাউন্সিলর হিসেবে আমার দায়িত্ব। কোনো স্টাফকে আমি মারধর করিনি। এটা আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষরযন্ত্র। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আমার কার্যালয় ঘিরে রেখেছিল। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস জানান, এর আগেও ২১ এপ্রিল নগর ভবনের অফিস সহায়ক মজিবুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেন কাউন্সিলর রহমান বিপ্লব। অবৈধভাবে প্ল্যানের বাইরে ভবন নির্মাণ করায় গোরস্থান রোড এলাকা বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামানকে নোটিশ দিতে যান তিনি( মজিবুর)। এ সময় নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেন কাউন্সিলর। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

স্বপন কুমার দাস জানান, সড়ক পরিদর্শকে মারধরের ঘটনায়ও থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে। দুটি অভিযোগই এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাত ১১টার দিকে সড়ক ছেড়ে কাজে যোগ দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বরিশাল কোতোয়ালি থানার ওসি আজিমুল করীম জানান, শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। উভয় পক্ষই সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেরয়া হবে।