‘কুকুর’ বলে ডাকের জেরে সংঘর্ষ, কামড়ে কয়েকজনকে হাসপাতালে

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় কয়েকজনকে কামড়ে হাসপাতালে পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2022, 01:06 PM
Updated : 23 April 2022, 01:06 PM

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ঝাঁটরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে দুমকি থানার ওসি মো. আবদুস সালাম জানান।

শনিবার এ বিষয়ে সত্তার শিকদার নামে এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঝাঁটরা গ্রামের মো. কালাম সর্দার ও আনোয়ার শিকদারদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। শুক্রবার বিকেলে কালাম সর্দার বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় আনোয়ার শিকদারের ১০ বছরের ছেলে কালাম সর্দারকে ‘কুত্তা কালাম’ বলে ডাক দেয়।

কালাম সর্দার ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রী, সন্তানসহ লোকজন নিয়ে আনোয়ার শিকদার ও সত্তার শিকদারের বাড়িঘরে অতর্কিতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় কয়েকটি পরিবারও মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারামারি হয়। এ সময় কয়েকজনের হাত কামড়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।  

পরে আহত অবস্থায় সত্তার শিকদারে স্ত্রী মাসুদা বেগম (৫০), মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (২০), কালাম সর্দারের ভাই সালাম সর্দারের স্ত্রী হাসিনা বেগমকে (৫০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া মাসুদার ছয় মাসের শিশুপুত্র রাইয়ান, ছেলে শাকিল (১৪) ও মেয়ে লাভলী (২৭) প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) নুরুল মোমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “আসলে এটি জমিজমা নিয়ে বিরোধ। ধস্তাধস্তি ও মারামারির একপর্যায়ে ছুটে যেতে একে-অপরকে কামড় দিয়েছে। কামড়ে আহত হয়ে উভয় পক্ষের তিনজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়া তিনজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।“

ওসি আবদুস সালাম বলেন, “কুত্তা বলে ডাক দেওয়া এবং জমিজমার বিরোধ দুটোর কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।“

দুমকি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুব আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ ব্যাপারে আটজনের নামে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালাম সর্দারের ভাই সালাম সর্দারের মেয়ে সীমা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “মারামারির একপর্যায়ে আমার চাচী হাসিনা বেগমকে সত্তার শিকদারের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে সুমাইয়া কামড়ে ধরে। কামড়ের পর একপর্যায়ে তাকে ছেড়ে দিলে চাচী আহত হয়ে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”

আনোয়ার শিকদারের স্ত্রী লাভলী বেগম বলেন, “আমাদের পাশের বাড়ির একটা ছেলে কালাম সর্দারকে ‘কুত্তা কালাম’ বলে ডাক দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। তার ধারণা হয়, আমরা ওই ছেলেকে এভাবে ডাকতে শিখিয়ে দিয়েছি। তাই আমাদের বসতঘর ভাঙচুরসহ ছয়জনকে কামড়িয়ে আহত করেছে।”

কালাম সর্দারের আরেক ভাতিজি মনসুরা আক্তার কামড়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “তাদের সঙ্গে আমাদের পূর্ববিরোধ চলছে। এতে দুপক্ষই মারামারি করেছে। তবে কামড়ের বিষয়টি বানোয়াট। কিছুদিন আগে আমার বাবা ও কাকাকে ওরা সন্ত্রাসী দিয়ে মেরেছে এবং আমাদের জমি দখল করে নিয়েছে।”