এছাড়া আছে তিন চাকার যান, যেগুলো ব্যস্ততম এই মহাসড়কে নিষিদ্ধ হলেও দাপিয়ে বেড়ায় সময়-অসময়, যে কারণে দুর্ঘটনাও ঘটে প্রায়ই।
এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী তিশা পরিবহনের বাসচালক আবুল কাশেম বলেন, “একবার জট লেগে গেলে সেটা আর সহজে শেষ হয় না। এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দুই ঘণ্টার পথ পার হতে অনেক সময় ছয় থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে।”
আবুল কাশেমের ভাষায় এই সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধান রয়েছে।
তিনি বলেন, “যদি হাইওয়ে পুলিশ বাজারগুলোয় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তিন চাকার যান বন্ধ রাখতে পারে, এবং সড়ক বিভাগ সংস্কারকাজ বন্ধ রাখে, তাহলে যানজট হবে না।”
এছাড়া আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা, কুমিল্লা সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার ও চৌদ্দগ্রাম বাজারেও যানজট হয়।
অনেক সময় বাজার মহাসড়কের খানিকটা জুড়েও বসে। তখন গাড়ি চলতে বেগ পেতে হয়। এছাড়া বাজার এলাকায় তিন চাকার বাহনসহ অন্য বাহন মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পণ্যবাহী বাহনও থেমে থাকে। কোথাও কোথাও গড়ে উঠেছে তিন চাকার বাহনের অবৈধ স্ট্যান্ড। এসব কারণে এই এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করতে হয় সব গাড়িকে। এতে প্রায়ই থেমে থেমে জট লাগে।
শুক্রবার সকালে বুড়িচং উপজেলার নিমসার এলাকায় এই মহাসড়কে একটি পিকআপকে পেছন থেকে থেকে এসে ধাক্কা দেয় কভার্ড ভ্যান। এতে ওই এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জট লেগে থাকে এবং কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে চান্দিনা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা অনেক ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করে।
সড়কে সংস্কারকাজ যানজটের আরেকটি কারণ।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় চার লেনের পরীক্ষামূলক সংস্কারকাজ গত বছর নভেম্বর শুরু হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সংস্কারকাজটি পুরোদমে চলছে। সংস্কারকাজের জন্য অনেক সময় মানুষকে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এখনও সংস্কারকাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, খুব বেশি সমস্যা না হলে তারা ২৫ রমজান পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে চান। এরপর হাইওয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ঈদের সময় কাজ বন্ধ রাখা হবে।
“আশা করছি সংস্কারকাজের জন্য ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি হবে না।”
সংস্কারকাজের সময় গাড়ি চলে এক লেইন দিয়ে। এ কারণে জট লাগে বা গাড়ির গতি কমে যায়। সংস্কারকাজ বন্ধ থাকলে সমস্যা কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
“আমরা ঈদের সময় নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে চাই।“
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ প্রস্তুতি নিয়েছে বলে হাইওয়ে পুলিশের দাউদকান্দি থানার ওসি জহুরুল হক জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঈদের সময় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করবেন। সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া কোনো গাড়ি থামানো হবে না। যেসব স্থানে বেশি জট লাগে সেসব স্থানে পুলিশের তৎপরতা বেশি থাকবে।
তিনি বলেন, যেসব স্থানে বাজার বসে সেসব স্থানে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সড়ক বিভাগ সংস্কারকাজ বন্ধ রাখলে মানুষ ঝামেলা ছাড়াই নির্বিঘ্নে ঘরে পৌঁছাতে পারবে। আর মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।