পরীক্ষা না দিতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন চাকরি প্রার্থীরা

লালমনিরহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে এসে প্রশ্ন না থাকায় পরীক্ষা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন অর্ধশতাধিক চাকরি প্রার্থী।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2022, 05:23 PM
Updated : 22 April 2022, 05:23 PM

তাছাড়া ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের অভিযোগ করেছেন অনেকে। শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্যে অব্যবস্থাপনার চিত্রটি পরিষ্কার বোঝা যায়।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম নবী স্বীকার করেন, “লালমনিরহাট সরকারি কলেজ, পিটিআই কলেজ ও লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজ সেন্টারে মেঘনা সেটে প্রশ্নপত্র প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল।”

এসব কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়ের পরে পরীক্ষা নেওয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন তারা পরীক্ষা দিতে পারেননি।

জেলায় ১৫ হাজারের বেশি চাকরি প্রার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির আবেদন করেন। শুক্রবার ছিল সেই নিয়োগ পরীক্ষা।

কিন্তু কোথাও কোথাও হলে প্রশ্নপত্র পৌঁছায়নি বলে চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ।

লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসেন আজিজুর রহমান।

আজিজুর বলেন, “পরীক্ষা দিতে এসে দেখি মেঘনা সেটের কোনো প্রশ্ন নেই। প্রশ্ন না থাকায় পরিদর্শকরা হল থেকে বের করে দেন আমাদের।

“এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও পরীক্ষা নেয়নি। আমরা পরীক্ষা দিতে চাই। আমাদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক।“

তাছাড়া প্রশ্নপত্রে ভুলের অভিযোগ এসেছে।

পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বের হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন লালমনিরহাট সরকারী কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা সাদিকা খাতুন ও আমেনা আকতার।

সাদিকা বলেন, “সুরমা কোডে আমাদের প্রশ্নপত্রে ক্রমিক সংখ্যার ধারাবাহিকতা ছিল না। কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকদের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি।”

আমেনা আকতার বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষকদের সাহায্য চাইলে তারা বলেন, ‘তোমাদের কপাল খারাপ’। অর্ধশতাধিক পরিক্ষার্থীকে ভুল প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়।”

‘প্রশ্নপত্রে ভুল’ ও ‘প্রশ্নপত্র সরবরাহে বিলম্ব’ দু-ই স্বীকার করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম নবী ও লালমনিরহাটের ডিসি আবু জাফর।

তবে ‘সবকিছু সমাধান করেই পরীক্ষা সুষ্ঠভাবে নেওয়া হয়েছে’ বলে তিনি দাবি করেন।

দীর্ঘ বিরতির পর দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়েছে শুক্রবার। তিন ধাপের এ পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরি পাবেন ৪৫ হাজার শিক্ষক।

এবারের পরীক্ষা প্রক্রিয়া ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ পরিচালনা করা হবে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছিলেন, এ নিয়োগে অনিয়মের কোনো ‘সুযোগ এবার নেই’।

তিন ধাপের এই পরীক্ষার প্রথম ধাপে ১৪ জেলার সব পরীক্ষার্থী এবং ৮ জেলায় আংশিক পরীক্ষা হবে।

দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা হবে আগামী ২০ মে। এ ধাপে ৮ জেলার সব পরীক্ষার্থী এবং ২২ জেলার আংশিক পরীক্ষা হবে।

তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষার তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। ওই ধাপে পরীক্ষা হবে ৩১ জেলায়। এর মধ্যে ১৭ জেলার সব পরীক্ষার্থী এবং ১৪টিতে আংশিক পরীক্ষা হবে।

লিখিত পরীক্ষায় উৎরানোর পর মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে জুলাইয়ের মধ্যে নতুন শিক্ষকরা নিয়োগ পাবেন।

আরও পড়ুন: