জাজিরায় আরেকটি ঘাট, বাংলাবাজারের পথে রাতেও ফেরি

ঈদে নৌ-পথে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে শরীয়তপুরের জাজিরার সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটের পাশে আরেকটি নতুন ফেরিঘাট নির্মাণ করা হবে বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছেন।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2022, 03:05 PM
Updated : 18 April 2022, 03:05 PM

এর ফলে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে জাজিরার নৌ-পথে যাত্রীদের চাপ সামলানো সহজ হবে এবং জনসাধারণের দুর্ভোগ কমবে।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক সোমবার সকালে সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাট পরিদর্শনে এসে বলেন, ২৮ এপ্রিলের মধ্যে নতুন ঘাটটি চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। দু-একদিনের মধ্যেই জাজিরায় নতুন ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

এ ছাড়া মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া নৌ-পথে দিনে ফেরি চলাচল করলে বিকাল ৪টা থেকে সারা রাত তা বন্ধ থাকে। ফলে রাতের বেলা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে জাজিরা ও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া নৌ-দিয়ে যাতায়াত করে। পারাপারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ কারণে এই নৌ-পথে রাতে ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি জানায়, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌ-পথ দিয়ে শরীয়তপুর, মাদারীপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন ফেরিতে পারাপার করে। ওই নৌ-পথে চলতে গিয়ে গত বছরের জুলাই মাসে একাধিকবার পদ্মা সেতুর পিলারের সঙ্গে রো-রো ফেরির ধাক্কা লাগে।

এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৮ আগস্ট থেকে ওই নৌ-পথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকে শরীয়তপুরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ চরম বিপাকে পড়েন। এরপর নদীর স্রোত কমে গেলে ওই নৌ-পথে দিনের বেলায় স্বল্প পরিসরে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাট এলাকায় গত বছরের ২৫ আগস্ট নতুন একটি ফেরিঘাট নির্মাণ করে বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ। নাব্য সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ওই পথে ফেরি চালু করা যায়নি।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ওই নৌ-পথে ফেরি চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে নৌ-পথে দিনে তিনটি ‘এ’ টাইপের ফেরি, দুটি ডাম্প ফেরি ও একটি ছোট ফেরি চলাচল করছে। বিকেল ৪টার পর বাংলাবাজার ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটে তিনটি ফেরি চলাচল করে।

অপরিকল্পিত ফেরি চলাচল শুরু করায় শরীয়তপুরের সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অপ্রশস্থ রাস্তা, বাস টার্মিনাল, গণশৌচাগার ও যাত্রী ছাউনি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

সোমবার বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক পরিদর্শনে এসে ঘাটের ইজারাদার, পরিবহন ব্যবসায়ী, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করেন। সভা শেষে তিনি অতিরিক্ত ঘাট তৈরি ও রাতে ফেরি চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝি লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার মোকলেস মাদবর জানান, পদ্মা সেতুতে বার বার ফেরির ধাক্কা লাগার কারণে গত বছরের শেষের দিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝি লঞ্চঘাটে ফেরি চলাচল শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। এরপর থেকে এ পথে প্রতিদিন শত শত গাড়ি ও হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করে। কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক সাংবাদিকদের বলেন, “পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার কারণে বাংলাবাজার ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ মোকাবিলা করার জন্য ওই ঘাট থেকে রাতে কয়েক দিন ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

“আর বিকল্প জাজিরা ঘাটে আরেকটি ফেরিঘাট নির্মাণ করা হবে ২৮ এপ্রিলের মধ্যে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর জাজিরা-শিমুলিয়া নৌপথের সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটটিই স্থায়ী ফেরিঘাট হবে। এ কারণে সড়ক প্রশস্থ করা হবে, টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ঈদের পর এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজে হাত দেওয়া হবে।