বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে হোরামন্দিরা হাওরে

সুনামগঞ্জে দিরাই উপজেলার হোরামন্দিরা হাওরের বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এই এলাকার অন্যান্য বাঁধও ঝুঁকিতে রয়েছে।   

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2022, 06:07 AM
Updated : 18 April 2022, 10:26 AM
উপজেলার জগদল ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের পুবের বন্দের কাছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধটি রোববার রাতে ভেঙে গিয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম জানান, রোববার রাতে পুরাতন সুরমা নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এই পানি দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় গিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছে। ফলে প্রতিটি বাঁধই ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই যে কোন সময় এখন অন্যান্য হাওরের বাঁধও ভাঙতে পারে।

তিনি বলেন, “এখন বাঁধ ভাঙলে প্রাকৃতিক কারণেই সংস্কারের সুযোগ নেই। কারণ বাঁধের পাশে কোন মাটি নেই। শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো বাঁশ, মাটি ও বস্তা ফেলে রক্ষার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছি।”

গত ১৭ দিন ধরে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে প্রশাসন কৃষক। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে পাহাড়ি ঢলের কাছে হেরে যাচ্ছেন হাওরের কৃষক।

বাঁধগুলো পাহাড়ি ঢলে নিমজ্জিত থাকায় ধস নামছে। ফলে বাঁধ ভেঙে, কোথাও বাঁধ উপচে হাওরের ফসল ডুবে যাচ্ছে।

রোববার সকালে তাহিরপুর উপজেলার  টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন গোলাবাড়ি ক্যাম্পের পাশের আপরমারা বাঁধ উপচে বর্ধিত গুরমার হাওরে পানি ঢুকে পড়ে। গুরমার হাওরের ২৭ নম্বর বাঁধটিও এ দিন ভেঙে যায়।

এর আগে এপ্রিলের শুরুতে তাহেরপুরের নজরখালি বাঁধ ভেঙে ২৫ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে যায়।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, হোরামন্দিরা হাওরে চলতি বোরো মৌসুমে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। যে জমিগুলো অবশিষ্ট আছে, বাধ ভেঙে গেলেও সব অবশিষ্ট ফসল নষ্ট হবে না। কিছু ফসল নষ্ট হতে পারে।”

তবে এই মুহূর্তে অপেক্ষা না করে কৃষকদের ধান কেটে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

জগদল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লাভলু আহমদ বলেন, “গত ১৫ দিন ধরে আমরা প্রতিটি বাঁধেই প্রশাসনের নির্দেশে কৃষকদের নিয়ে রাতদিন কাজ করছি। কিন্তু যেভাবে তিন-চারদিন ধরে পানি বাড়ছে তাতে সব হাওরেই পানি ঢুকতে পারে। আমরা কৃষকদের ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছি।”