নারায়ণগঞ্জে লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দাবি

নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচটি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ ও কাজ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2022, 03:21 PM
Updated : 13 April 2022, 03:31 PM

আসন্ন ঈদে ঘুরমুখো মানুষের চলাচলে সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।

নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে বুধবার দুপুরে এ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সবুজ সিকদার।

লিখিত বক্তব্যে সবুজ সিকদার বলেন, চলতি বছরের ২০ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে রূপসী-৯ কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এম এল আফসার উদ্দিন ডুবে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী ‘সানকেন ডেক’ লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরে নারায়ণগঞ্জ থেকে আরও পাঁচটি রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এতে ৫০০ লঞ্চ শ্রমিক ও কর্মচারী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রোজা ও ঈদে শ্রমিকরা বেতন-বোনাস না পেয়ে পরিবার নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কোনো নৌ-দুর্ঘটনা ও মানুষের প্রাণহানি হোক সেটা কেউ চায় না।

“কিন্তু এই সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের অন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় নৌ-পথে চলাচলরত যাত্রীরা সাধারণ ছোট ট্রলারযোগে শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা নদী দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে।”

সড়ক পথে যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়লে সেই পথে যান চলাচল কখনও বন্ধ করে দেওয়া হয় না – এই বিষয়টিও সংশ্লিষ্টদের নজরে আনা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ব্রিটিশ আমল থেকে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর থেকে বিভিন্ন এলাকায় লঞ্চ ও স্টিমারে যাতায়াত করত। তার ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতটি রুটে ৭০টি লঞ্চ চলাচল করে। নাব্যতা সংকটের কারণে দুইটি রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। সারাদেশে এই লঞ্চের সংখ্যা ৮০০ এর অধিক।

“কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ কোনো সময়সীমা না দিয়ে ‘সানকেন ডেক’ লঞ্চ চলবে না জানিয়ে সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, নারায়ণগঞ্জ থেকে যেসব রুটে ‘সানকেন ডেক’ লঞ্চ চলত সেসব লঞ্চের মালিকদের সময় বেঁধে দিয়ে লঞ্চগুলোর আকার বড় করে চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে শ্রমিক-কর্মচারীরা কাজে ফিরতে পারবে। সাধারণ যাত্রীরাও কম খরচে চলাচল করতে পারবে। শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাড়ে অসংখ্য কারখানা, ঘাট সেতু নির্মাণ হওয়ায় দিনে দিনে নদী ছোট হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে এসেছে। তাই নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচটি রুটে যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

এ সময় বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি মঈন মাহমুদ, সহ-সভাপতি জুয়েল প্রধান, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।