গোপালগঞ্জে চারজনকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড

গোপালগঞ্জে শিশু-কিশোরসহ চারজনকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2022, 10:45 AM
Updated : 13 April 2022, 10:45 AM

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্বাস উদ্দীন বুধবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মাহাবুবুর রহমান জানান।

সাজাপ্রাপ্ত আজাদ মোল্যা (৪৭) সদর উপজেলার চরমানিকদাহ গ্রামের বেলায়েত মোল্যার ছেলে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রায় ২৭ বছর আগে সদর উপজেলার ডুমদিয়া গ্রামের শরিফা বেগমকে বিয়ে করেন আজাদ মোল্যা। সন্দেহের জেরে তিনি স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর ও নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শরিফা প্রায়ই তার চার সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যেতেন।

২০১৪ সালের ১৫ মে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে আজাদ তার স্ত্রীকে বাড়িতে ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শরিফা অনীহা প্রকাশ করলে আজাদ ক্ষিপ্ত হয়ে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেন আর দুই ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যান। ১৭ মে রাতে শরিফার মা ফুড়িয়া বেগম (৭০) তিন নাতি-নাতনিকে (অন্য দুই মেয়ের ছেলে-মেয়ে) নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। 

রাত ১২টার দিকে আজাদ সহযোগীদের নিয়ে ঘরে কেরোসিন বা পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। শরিফার চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও ফুড়িয়া বেগম, আমিনুর (১৪) ও তামিম (৫) ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর দগ্ধ তনিমা (৫) গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির দুই ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়।

এ ঘটনায় ফুড়িয়া বেগমের ছেলে সাইফুল গাজী ২০১৪ সালের ১৮ মে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ আজাদকে গ্রেপ্তার করে।

ওই বছরের ২৮ অগাস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম রেজা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। গ্রেপ্তারের পর থেকে মামলার রায় পর্যন্ত আসামি জেলহাজতে ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন শহিদুজ্জামান পিটু, ফজলুল হক খান খোকন ও সামসুন্নাহার। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. ফারহান মোল্লা।

মামলার বাদী সাইফুল গাজী বলেন, ”আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। দ্রুত রায় কার্যকরে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।”

আইনজীবী শহিদুজ্জামান পিটু বলেন, ”রায়ে মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভিকটিমের পরিবার সঠিক বিচার পেয়েছে।”

তবে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. ফারহান।