লাঙ্গলবন্দে মহাঅষ্টমীর পূণ্যস্নানে মানুষের ঢল

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পূণ্য স্নানোৎসব শুরু হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2022, 08:07 AM
Updated : 9 April 2022, 08:07 AM

শুক্রবার রাত ৯টা ১১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে তিথি শুরু হওয়ার পর থেকে পূণ্যার্থীদের ঢল নামে। লগ্ন শেষ হবে শনিবার রাত ১১টা ৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে। প্রতিবারের মতো এবারও দেশ-বিদেশ থেকে কয়েক লাখ পূণ্যার্থী অংশ নিয়েছেন স্নানোৎসবে।

১৮টি ঘাটে পূণ্যার্থীরা স্নান করছেন। এদিকে স্নানোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাঙ্গলবন্দ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে পূণ্যার্থীরা কাপড় বদলানোর জায়গা, যানজট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে স্নানোৎসব উপলক্ষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে পূণ্যার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

কুমিল্লা থেকে আসা পূণ্যার্থী আশালতা বলেন, তীর্থস্থান লাঙ্গলবন্দ। পূর্ণ লাভের আশায় পরিবারের সবাই স্নান করতে এসেছেন।

“স্নান করে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছি। ভগবান যেন সবাইকে সুস্থ ও সুন্দর রাখেন। সবার মনের বাসনা পূরণ করুন।”

নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা দিলীপ কুমার মণ্ডল বলেন, “আমরা যে পাপ করেছি। সেটা থেকে মুক্তি পেতে লাঙ্গলবন্দে স্নান করতে এসেছি। বিশ্বের সবার জন্য দোয়া করেছি। সবাই করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকুক।”

পুরোহিত পঙ্কজ চক্রবর্তী বলেন, “পূণ্যার্থী যারা আসেন তাদেরকে মন্ত্র পাঠ করিয়ে স্নান করাই। এখানে স্নান করলে পাপমোচন হয় এবং মনোবাসনা পূরণ হয়। অন্য বছরের তুলনায় এবার পূণ্যার্থী বেশি।”

এদিকে স্নানোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি সরোজ সাহা বলেন, পূণ্যার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ। এবার স্নানোৎসব দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পূণ্যার্থীরা এসেছেন। আমরা আশা করছি, এবার পূণ্যার্থীর সংখ্যা ১০ লাখের মতো হবে।

সভাপতি বলেন, ললিতমোহন সাধু ঘাট, নাসিম ওসমান ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজঘাট, পঞ্চ পাণ্ডব ঘাট, মাকরী সাধু ঘাট, গান্ধী মহাশশ্মান ঘাট, ভদ্রেশ্বরী কালী ঘাট, জয়কালী মন্দির ঘাট, রক্ষাকালী মন্দির ঘাট, পাষাণকালী মন্দির ঘাট, স্বামী দিগ্বিজয় ব্রহ্মচারী আশ্রম প্রেমতলা ঘাট, তাজপুর-জহরপুর মুনি ঋষিপাড়া ঘাট, শ্রী রামপুর জগদ্বন্ধু (ব্রহ্মা মন্দির) ঘাট, দক্ষিণেশ্বরী কালী মন্দির ঘাট, পরেশ মহাত্মা আশ্রম ঘাট, সাব্দী রক্ষা কালী মন্দির ঘাট, সাব্দী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ঘাটে পূণ্যার্থীরা স্নান করছেন।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পূণ্যার্থীদের জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা দিয়ে পুরো সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা নজরদারি করা হচ্ছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।