বৃহস্পতিবার বিকালে পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাংঘাটা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন জানিয়েছেন।
নিহত মোর্শেদ আলী (৪০) পিএমখালী ইউনিয়নের মাইজপাড়ার প্রয়াত ওমর আলীর ছেলে।
স্বজনদের বরাতে পরিদর্শক সেলিম উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে পানি সেচযন্ত্র ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুটি পক্ষের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
“তিন মাসে আগে এ বিরোধের জেরে স্থানীয় মাহামুদুল হক বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের নুরুল কবিরকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।”
সেলিম বলেন, এই বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার বিকালে চেরাংঘাটা বাজারে মোর্শেদ আলীকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায়। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত যুবককে উদ্ধার করে স্থানীয়রা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছোট ভাই আইনজীবী জাহেদ আলী বলেন, পিএমখালী ইউনিয়নের পাতলী এলাকায় বাঁকখালী নদীতে স্থাপিত 'রাবার ড্যাম সেচ প্রকল্পের' অধীন একটি পানি সেচযন্ত্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে গত ডিসেম্বর মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেন তার জেঠাতো ভাই নুরুল কবির। এ নিয়ে পানি সেচ যন্ত্রটির ইতিপূর্বে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা মতিউল ইসলাম মতির সঙ্গে নুরুল কবিরের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন নুরুল কবিরকে মারধর করেছিল।
"এ ঘটনায় আমার বড় ভাই মোর্শেদ আলী প্রতিবাদ জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকেও মারধর করে।”
তিনি আরও বলেন, "এরপর থেকে আমার ভাইসহ স্বজনদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল প্রতিপক্ষের লোকজন। তাদের হুমকিতে গত ২/৩ মাস পর্যন্ত আমরা এক প্রকার ঘরবন্দি জীবনযাপন করেছি। একা কোথাও চলাফেরা করা সম্ভব ছিল না।"
ঘটনার বিবরণে জাহেদ বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে সাড়ে ৫টায় চেরাংঘাটা বাজারে তার ভাই মোর্শেদ আলী ইফতার কিনতে যান। এ সময় ১০/১৫ জন লোক ‘ফাঁকা গুলি ছুড়ে’ তার উপর হামলে পড়ে।
"এ সময় হামলাকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এক পর্যায়ে হাতুড়ি দিয়ে পেটায়; তার শরীরের কয়েকটি স্থানে ছুরিকাঘাতও করা হয়েছে।"
পরিদর্শক সেলিম জানান, হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের দুইটি দল অভিযান চালাচ্ছে। স্বজনদের এজাহার জমা দেওয়া হলে মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।