রোববার ও সোমবার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও মঙ্গলবার থেকে তা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে পানি নামতে শুরু করবে বলে আশা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ছাইফুল আলম মঙ্গলবার বলেন, “আসাম ও মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ইটনা উপজেলার ধনু, বৌলাই ও কালনী নদীর পানি বেড়েছে। এর ফলে চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিচু এলাকায় লাগানো আধাপাকা বোরো ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তবে এখনও মূল হাওরে পানি প্রবেশ করেনি।”
ছাইফুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুপুরে আমার সঙ্গে পাউবো কর্মকর্তাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, নদীর পানি আজ স্থিতিশীল রয়েছে। সন্ধ্যার পর হয়তো পানি কমতে শুরু করবে।”
দেশের খাদ্যশস্যের একটি বড় জোগান আসে হাওর থেকে। বিশাল হাওর বিস্তৃত সাত জেলা নিয়ে। এ জমির পুরোটাই এক ফসলি। হাওরের বোরো ধান রক্ষায় রয়েছে ফসল রক্ষা বাঁধ। এ বাঁধ তলিয়ে গেলে মানুষের দুর্দশার সীমা-পরিসীমা থাকে না। তাই বাঁধ নিয়ে শঙ্কা বোরো ফসল না তোলা পর্যন্ত কাটে না কৃষকের।
কৃষকরা বলছেন, কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত চারটি উপজেলার কৃষকদের সারা বছরে একমাত্র আয়ের উৎস বোরো ধান। এ ধান বিক্রির অর্থ দিয়ে সংসার চালান তারা। হাওরের পানিতে বোরো তলিয়ে যাওয়ায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে জেলায় এক লাখ ৬৪ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ইটনা উপজেলায় বোরো ধান আবাদ হয়েছে ২৫ হাজার ৮৩০ হেক্টর। ধানকাটা শুরু হতে এখনও ১৫ থেকে ২০ দিন বাকি।
স্থানীয় কৃষক মোহন মিয়া বলেন, “আমার চরের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান কাটার কোনো পরিস্থিতি নেই। ঋণ করে চাষাবাদ করেছি। এখন কিভাবে দিন কাটবে, কিভাবে খাব ও ঋণ পরিশোধ করব এ চিন্তায় দিশেহারা।”
কৃষক ফজর আলী বলেন, “কিছুটা পাকলে হয়ত এসব ধান আমাদের কাজে লাগত। এখন গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হবে।”
কৃষক মোতালেব মিয়া বলেন, “পানি আরও বাড়তে থাকলে আমাদের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে। কারণ আমরা অনেকেই বর্গা নিয়ে এবং ঋণ করে ধান চাষ করেছি।”
আরও পড়ুন: